রংপুর জিলা স্কুলে ৫০টি ব্যাচের তিন দিনব্যাপী ফুটবল উৎসব শুরু

রংপুর জিলা স্কুলের ৫০টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ফুটবল উৎসব আজ থেকে শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী খেলার একটি মুহূর্ত
ছবি: মঈনুল ইসলাম

তিন দিনব্যাপী দিবারাত্রি ফুটবল উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে রংপুর জিলা স্কুলের প্রাক্তন ৫০টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মেতে উঠেছেন ঈদের আনন্দে। এ যেন প্রাণের উৎসব, মিলনমেলা। বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে নগরজুড়ে এ পুনর্মিলনী উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে শুরু হয়েছে এ ফুটবল উৎসব। গত ঈদুল ফিতরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল তিন দিনব্যাপী ক্রিকেট উৎসব।

রংপুর নগরের প্রধান সড়কের পাশে রংপুর জিলা স্কুল। ১৮৩২ সালে এ স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুলের প্রধান ফটক পেরিয়ে একটি পাকা সড়ক চলে গেছে প্রধান ভবনের দিকে। সড়কের দুই পাশে পূর্ব-পশ্চিমে দুটি বিশাল মাঠ। উত্তরে আরও একটি মাঠ। তিনটি মাঠে প্রাক্তন ৫০টি ব্যাচের শত শত শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে এ বিদ্যালয়। সেখানে বাজছে বাদ্যবাজনা। ঈদ করতে বাড়িতে আসা রংপুর জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা একনজর ঘুরে যাচ্ছেন তাঁদের প্রিয় বিদ্যাপীঠ। অনেকেই শখের বশে ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছেন। কেউ স্ত্রী-সন্তানদের নিয়েও মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কমতি নেই।

আয়োজকদের সূত্রে জানা যায়, এই ক্রিকেট উৎসবে ১৯৭১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫০টি ব্যাচের ১৪টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই এ উৎসবে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যাচের আটটি দল এবং ১৯৭১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ব্যাচের ছয়টি দল এ উৎসবে অংশ নিয়েছে।

আজ সকাল ৯টায় ২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যাচের ‘হোয়াইট ওয়াকারস’ বনাম ‘ব্রাদার্স অব আরজেডএস’ দলের খেলার মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করেন জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ।

রংপুর জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের তিন দিনব্যাপী ফুটবল উৎসবের খেলাগুলো শুধু দিনেই নয়, রাতেও অনুষ্ঠিত হবে। আজ থেকে এ উৎসব শুরু হয়েছে

শুধু দিনেই নয়। এই খেলা অনুষ্ঠিত হবে রাতেও। দিবারাত্রি খেলা চলবে। উত্তরের মাঠের চারদিকে খুঁটিতে বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত একাধিক খেলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জেলার ফুটবল অঙ্গনে অবদান রয়েছে, এমন অনেকেই বিভিন্ন দলে খেলছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক জাভেদ আখতার, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মাহমুদুল হকসহ প্রশাসনের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন।

রংপুর আইন কলেজের অধ্যক্ষ সাজেদ হোসেন বলেন, ‘জিলা স্কুল মানে একটা আবেগের জায়গা। তার ওপর এবার ফ্লাডলাইটে ফুটবল খেলার বিষয়টি রংপুরে বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে। এ যেন শুধু খেলা নয়, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলাও বটে। গত দুই মাস আগে ঈদুল ফিতরের পর ক্রিকেট উৎসবেও খেলেছি, এবার ফুটবলও খেলছি।’

প্রাক্তন শিক্ষার্থী আইনজীবী তাহের আলী বলেন, ‘শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রিয় বিদ্যাপীঠের মাঠে ছুটে এসেছি। ঈদের আগে থেকেই ৫০টি ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উৎসবমুখর পরিবেশ। এবারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ফ্লাডলাইটে ফুটবল খেলা।’

ফুটবল উৎসবের অন্যতম সংগঠক রংপুর জেলা সোনালি অতীত ফুটবল ক্লাবের সদস্য রাকিবুজ্জামান। তিনি বলেন, এবার ঈদুল আজহার পরদিন থেকে তিন দিনব্যাপী ফুটবল উৎসব। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে এবং স্মৃতিচারণা করতেই এমন ঈদ পুনর্মিলনী উৎসবের আয়োজন।