উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে প্রথম আলোর চরে আলোর পাঠশালায় কম্বল নিতে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব বিবিজন বেওয়া। তিনি বলেন, ‘কাইল থেকি ঠান্ডা খুব বেশি পড়ছে। রাইতভর কনকনা শীত বৃষ্টির মতো পড়ে। রাইত হইলে শীতত হাত-পা ঠকঠক করি কাঁপে। একনা কম্বলের জন্য ম্যালা মানসের কাছে বায়না ধরছং। কাইও কম্বল দেয় নাই। আজ হামাক স্কুলত ডাকি আনি কম্বল দিলেন, হামার খুব উপকার হইল বাহে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার প্রথম আলো চরে দুই শতাধিক অসহায় নারী-পুরুষ ও আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় কম্বল পেয়ে আবেদা বেওয়ার মতো অসহায় শীতার্ত মানুষগুলো স্বস্তি প্রকাশ করেন।
বয়সের ভারে নুয়ে পড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী জসিম উদ্দিন (৬৮) কম্বল নিতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এবারে খুব শীত পড়ছে বাহে। চারদিকে কিছুই দেখা যায় না। রাইত হইলে শীত কনকন করি হাড্ডিত নাগে। প্রতিবন্ধী ভাতার টাকায় খুব কষ্টে দিন যায়। গরম কাপড় কেনমো, তার টাকা নাই। কম্বল পায়া খুব উপকার হইল। এল্যা ঠান্ডা জার (শীত) একনা কম নাগবে।’
এর আগে গত কয়েক দিন থেকে প্রথম আলো চরের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরি করে কম্বল বিতরণের স্লিপ দেন বন্ধুসভার সদস্য ও আলোর পাঠশালার শিক্ষকেরা। আজ সকাল থেকে সেই স্লিপ নিয়ে এলাকাবাসী আলোর পাঠশালা মাঠে উপস্থিত হলে তাঁদের হাতে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। যাঁরা কম্বল নিতে আসতে পারেননি, তাঁদের বাড়িতে কম্বল পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি সফি খান, বন্ধুসভার উপদেষ্টা মোখলেছুর রহমান, বন্ধুসভার সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক ভুবন কুমার, উপ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোরাইয়া শিমু, জেবা তাকিয়া, বাঁধন, আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের প্রমুখ।
আতাউর রহমান বলেন, প্রথম আলো চরের তিন দিকে তিনটি নদ রয়েছে। এখানকার মানুষ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। গত এক বছরে এই চরের শতাধিক পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। তীব্র শীতে দরিদ্র মানুষ অনেক কষ্টে ছিলেন। আজ তাঁরা প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল পেলেন। যদিও একটি কম্বলের দাম টাকার অঙ্কে অনেক কম, তবুও এখানকার মানুষ এই কম্বল পেয়ে খুব খুশি।
শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।