চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ির শিশুপার্কটি সিলগালা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ সোমবার দুপুরে সিলগালার করার পর জায়গার মালিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় চট্টগ্রাম সেনানিবাসের নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া তাহের এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু এমং মারমা মং ও রাকিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পার্কের জায়গাটি ব্যবহারের অনুমতি নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এটির আয়তন ২ দশমিক ৮ একর। ১৯৯২ সালে শিশুপার্ক স্থাপনের জন্য ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। ইজারার মেয়াদ শেষ হলে ২০২০ সালে মাসিক দেড় লাখ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আবারও ১৫ বছরের চুক্তি করে সিটি করপোরেশন।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, সিটি করপোরেশনকে যেসব শর্তে শিশুপার্কের জায়গাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল তার ব্যত্যয় ঘটায় গত ২৩ ও ২৭ আগস্ট এবং ১৩ সেপ্টেম্বর তিন দফায় চিঠি দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। চিঠিতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অবস্থানকারী জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় এবং যানজট নিরসনের জন্য শিশুপার্কের ইজারা বাতিলে জোর দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এরপর পার্কটির ইজারা বাতিল করে জায়গাটি উদ্ধারে নির্দেশনা দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুযায়ী জায়গা উদ্ধার করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এই শিশুপার্কের উত্তর-পূর্ব পাশে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস অবস্থিত।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীও শিশুপার্কের ইজারা বাতিলের অনুরোধ জানিয়ে সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুর ইসলামের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস একটি জাতীয় স্থাপনা। এখানে সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় কাজে অবস্থান করেন। এই রকম একটি স্থাপনার পাশে শিশুপার্ক থাকায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সার্বিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়ে থাকে। আর শিশুপার্কের কারণে সার্কিট হাউসের সামনের সড়কে সারাক্ষণ যানজট সৃষ্টি হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে উন্মুক্ত মাঠের স্বল্পতা রয়েছে। শিশুপার্কের জায়গাটিতে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত উদ্যান করা যেতে পারে। পাশাপাশি এই জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা যেতে পারে।