নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ জন বন্দীর মধ্যে ২৯৮ জন বন্দী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। গত তিন দিনে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন। নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতি এই তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া পাঁচজন বন্দী থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং চারজন বন্দী পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ নিয়ে কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ বন্দীর মধ্যে ৩০৭ জনকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
গত শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে নরসিংদী কারাগারে আন্দোলনকারীরা হামলা চালায়। ওই সময় কারাগারের ভেতরে পেট্রলবোমা মেরে বন্দীদের থাকার জায়গাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। কারারক্ষীদের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে ভেতরে ঢুকে বন্দীদের অনেক কক্ষের তালা খুলে দেয় হামলাকারীরা। কিছু কক্ষের তালা ভেঙে ফেলা হয়। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে গেলে কারাগারে থাকা ৮২৬ জন বন্দীই পালিয়ে যান। এর আগে অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের কাছ থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ আহমুদুল হক জানান, সোমবার থেকে বন্দীরা আত্মসমর্পণ করার জন্য আদালতে আসা শুরু করেছেন। আইনজীবী সমিতির মাধ্যমে গত সোমবার ৫ জন, গতকাল মঙ্গলবার ১৩৮ এবং আজ বুধবার ১৫৫ জন বন্দী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে বেশকিছু সাজাপ্রাপ্ত ও হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। আরও অনেক বন্দী আগামীকাল আত্মসমর্পণ করতে আসবেন।
জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশি অভিযানে কারাগারের অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের কাছ থেকে লুট হওয়া আরও ৬টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে ৩৯টি অস্ত্র ও ১ হাজার ৬৭টি গুলি উদ্ধার হয়েছে। বাকি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কারাগার কর্তৃপক্ষের দুটি মামলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় করা ১০টি মামলায় এ পর্যন্ত ১০২ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জের আদালতে পাঠানো হয়েছে।