মনোরঞ্জন শীল গোপাল
মনোরঞ্জন শীল গোপাল

১০ বছর আগের হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীলের বিরুদ্ধে মামলা

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় দুই কিশোরকে হত্যার ঘটনায় দিনাজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে বীরগঞ্জ থানায় নিহত কিশোর সালাউদ্দিনের (১৬) মা জহুরা খাতুন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীলসহ মামলার এজাহারে ২৭ জনের নাম উল্লেখ ও ৯০-১০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে মারা যাওয়া ওই দুই কিশোর হলেন উপজেলার ভগিরপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে মো. সালাউদ্দিন (১৬) ও তাঁরই বন্ধু একই উপজেলার সাহাডুবি উত্তরপাড়া গ্রামের আলিম উদ্দিনের ছেলে আসাদুল (১৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মনোরঞ্জ শীল। নির্বাচন যেন ভন্ডুল করতে না পারে, সে জন্য মনোরঞ্জন শীল বিএনপি-জামায়াতসহ ২০–দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের হত্যা ও গুম করার নির্দেশনা দেন নিজ দলীয় নেতা-কর্মীদের।

ওই দিন সকালে নিহত সালাউদ্দিন খালার বাড়ি গণপৈত এলাকা থেকে নিজ বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। পথে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় বন্ধু আসাদুলের। এরপর দুজন একত্রে ভগিরপাড়ার দিকে আসার সময় বেলা একটায় উপজেলার ভেলাপুকুর (বাবুরহাট) নামের এলাকায় পৌঁছালে এজাহারনামীয় আসামিরা তাঁদের ধাওয়া করেন। পরে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই বন্ধুকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করেন তাঁরা। একপর্যায়ে দুজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের ফেলে রেখে চলে যান আসামিরা। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার দিন বিকেলে সালাউদ্দিনের মৃত্যু হয় এবং পরের দিন সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন আসাদুল।

এ ঘটনায় পরের দিন কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে পুলিশ এবং ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়।

এজাহারে বাদী জহুরা খাতুন আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার সময় আসামিরা ক্ষমতায় থাকায় ন্যাযবিচার পাওয়া বা মামলা করার মতো কোনো অনুকূল পরিবেশ ছিল না। এমনকি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত জীবননাশের হুমকি দেওয়ার কারণে আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারেননি তাঁরা।

বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলামকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।