উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আজ শনিবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশামুক্ত স্বচ্ছ নীল আকাশ, সকাল সকাল ঝলমলে রোদ। হেমন্তের শেষ দিকে এসে চমৎকার এ আবহাওয়ায় দেখা মিলছে মনোমুগ্ধকর কাঞ্চনজঙ্ঘার। দুদিন ধরে দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে হিমালয়ের পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্লভ দৃশ্য দেখে আর ছবি তুলতে পেরে অভিভূত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা।
হেমন্তের এ সময়টাতে আকাশ পরিষ্কার থাকলেই পঞ্চগড় জেলা শহরসহ তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দেখা মেলে হিমালয়ের পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার। তবে এবার শরতের শেষের দিকে স্বল্প সময়ের জন্য উত্তর দিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা উঁকি মারলেও তেমন একটা স্থায়ী হয়নি। হেমন্ত শুরুর পর সর্বশেষ গত ১০ নভেম্বর দেখা মিলেছিল কাঞ্চনজঙ্ঘার। এরপর আর দেখা না মেলায় আশাহত হয়ে ফিরেছিলেন অনেক পর্যটক।
অবশেষে গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে স্পষ্ট হয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্লভ দৃশ্যের। দিনভর সূর্যের আলোর তারতম্যে রং বদলেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আজ ভোর থেকে একই দৃশ্যের দেখা মিলছে পঞ্চগড় শহরসহ তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে।
আজ সকালে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকেরা পঞ্চগড় জেলা শহরসংলগ্ন করতোয়া সেতু থেকে উপভোগ করছেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য। পঞ্চগড় শহর থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথে অনেককেই গাড়ি থামিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি তুলতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার মুঠোফোনে ভিডিও কল দিয়ে বাড়িতে থাকা স্বজনদের দেখানোর চেষ্টা করছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। কেউ কেউ ছুটে যাচ্ছেন তেঁতুলিয়ার ঐতিহাসিক ডাকবাংলোতে মহানন্দা নদীর তীরে।
সিলেট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসা লন্ডনপ্রবাসী ইমরান আহম্মেদ বলেন, ‘আমি ৩৫ বছর ধরে লন্ডনে থাকি। এবার দেশে এসে ইচ্ছা ছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় যাব। সে হিসেবে বেড়াতে এসেছি। তবে মনের মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা নিয়েই এসেছিলাম। কারণ, শুনেছি কাঞ্চনজঙ্ঘা কখনো দেখা যায়, আবার কখনো দেখা যায় না। তবে আমাদের হয়তো ভাগ্য ভালো, এ জন্য ভোর থেকেই স্পষ্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাচ্ছি। দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এত সুন্দর দৃশ্য দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে।’
মাখদুম মাসুম মাশরাফী নামের আরেক পর্যটক বলেন, ‘এর আগে ভারতে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ হয়েছিল। এবার নিজের দেশ থেকে এত সুন্দর দৃশ্য দেখে আমরা অভিভূত।’