বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, ‘গণমাধ্যম এখন পুরো স্বাধীন, অপরাধ করলে আমার বিরুদ্ধেও লিখবেন।’ আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নগরের ভদ্রা আবাসিক এলাকায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাড়িঘর, হাটবাজার, পতিত জায়গাসহ বিভিন্ন জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বা দখলে আছে। আপনারা জাতির বিবেক। রাষ্ট্রের চারটি স্তম্ভের মধ্যে আপনারা হচ্ছেন অন্যতম। এখন আর কোনো দালালি সংবাদপত্র নেই। গণমাধ্যম এখন পুরো স্বাধীন। আমি যদি কোনো অপরাধ করি, আমার বিরুদ্ধেও আপনারা লিখবেন। সমস্ত বিষয় আপনারা মিডিয়াতে আনবেন। তাহলে জনগণ সচেতন হবে। খারাপ মানুষগুলো কিছু করতে সাহস পাবে না।’
দলের সর্বোচ্চ নেতার আদেশে আদিষ্ট হয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন বলে দাবি করেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা যদি কোনো অপকর্ম করে, ভূমি দখল, প্রতিষ্ঠানে হামলা, হামলা-ভাঙচুর, প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদাবাজি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ডিজিএফআইসহ গোয়েন্দাদের কাছে আপনারা অভিযোগ দেবেন। অনেকেই দুষ্কৃতকারী। দলের পাশে থেকে এ ধরনের অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এতে জাতির সামনে সবার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই যেকোনোভাবেই হোক, আইনের মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘তিন দফা মেয়র ছিলাম, একবার এমপি ছিলাম। এই শহর আমার না। আমার, আমি—এগুলো হচ্ছে অহমিকার কথা। এই শহর আমাদের সবার। সবাই মিলে শান্তির শহর গড়ে তুলেছিলাম। সবাই নিরাপদে ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে তা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। আমি আশা করছি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই যারা ভাঙচুর, লুটপাট, ভূমিদস্যুতা করেছে, হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আইনের শাসনের মাধ্যমেই তাদের বিচার হবে।’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা বা কোনো প্রক্রিয়া আছে কি না—জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘অবশ্যই তিনি ফিরবেন। কারণ, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। যাঁদের বিরুদ্ধে বিচার-আচার আছে, তাঁরা আইন ফেস করে আসবেন। পলাতক নেত্রী শেখ হাসিনাকেও ফিরতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিশ্ব আদালতে বিচার হবে।’
ছাত্রদল-বিএনপি নেতা-কর্মীদের হুমকির মুখে রাজশাহী সিটি কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, ওই অধ্যক্ষ একজন নারী। তাঁকে হত্যা করা হবে বলেও হুমকির কথা শুনেছেন। দলের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি বলা হয়েছে। আশা করছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই বিএনপির পক্ষ থেকে এর উপযুক্ত জবাব পেয়ে যাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বারের সাবেক সভাপতি আইনজীবী আবুল কাসেম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে।