পিরোজপুরের নেছারাবাদে দায়ের কোপে জাহারুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তির দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ জাহারুলের স্ত্রী মুরশিদা বেগমকে (৩৭) আটক করেছে। স্বামীর মারধর থেকে নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে মুরশিদা এই ঘটনা ঘটান বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার বালিহারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর জখম জাহারুল ইসলামকে আজ শুক্রবার স্বজনেরা নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বালিহারী গ্রামের বাসিন্দা জাহারুল ইসলাম ভবঘুরে প্রকৃতির। কাজকর্ম করেন না। স্ত্রী মুরশিদা বেগম দুই মেয়েশিশুকে নিয়ে কষ্ট করে সংসার চালান। মুরশিদা বাবার বাড়িতে উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু জমি পেয়েছেন। জাহারুল ওই জমি বিক্রি করে টাকা এনে দিতে বলতেন। রাজি না হওয়ায় মুরশিদাকে প্রায়ই মারপিট করতেন তিনি। গতকাল রাতে একই বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। জাহারুল মারপিট করে মুরশিদাকে বালিশ চাপা দিয়ে ধরেন। মুরশিদা স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। এরপর জাহারুল পুনরায় তেড়ে যান। আত্মরক্ষার্থে মুরশিদা বেগম ঘরে থাকা দা হাতে নিয়ে স্বামীকে কোপাতে থাকেন। এতে জাহারুলের দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সুটিয়াকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ওই দম্পতির মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জেরে জাহারুল ইসলামকে কুপিয়ে দুই হাতের কবজি কেটে ফেলেন স্ত্রী মুরশিদা বেগম। খবর পেয়ে আজ সকালে জাহারুলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর দেওয়ার পর দুপুরে পুলিশ মুরশিদা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মুসাররাফ শবনম বলেন, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাহারুল নামের এক ব্যক্তির দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নেছারাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সোলায়মান বলেন, মুরশিদা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, জাহারুল বালিশ চাপা দিলে তিনি নিজেকে রক্ষার জন্য স্বামীকে কুপিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা নেওয়া হবে।