পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) পথসভায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাধা দেওয়া ব্যক্তিরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী পরিচয় দিয়েছেন বলে সিপিবির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
কর্মসূচিতে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনের (প্রিন্স) বক্তব্য দেওয়ার সময় মাইক্রোফোন ও ব্যানার কেড়ে নেওয়া হয়। এতে পথসভাটি পণ্ড হয়ে যায়। আজ বুধবার দুপুরে তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের তেঁতুলতলায় এ ঘটনা ঘটে।
সিপিবির নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুরে পূর্বনির্ধারিত শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতন্ত্র জাগরণ যাত্রার কর্মসূচি হিসেবে তেঁতুলিয়ায় পথসভা করছিলেন সিপিবির নেতা-কর্মীরা। পথসভার শেষ দিকে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক এসে সিপিবির নেতাদের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা সিপিবিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে ব্যানার কেড়ে নিলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। তাঁরা রুহিন হোসেনের হাত থেকে মাইক্রোফোনও কেড়ে নেন। পরে সিপিবির নেতা-কর্মীরা ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।
রুহিন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পথসভায় তাঁর বক্তব্যের সময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক এসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন। তাঁরা তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন ও নেতা-কর্মীদের হাত থেকে ব্যানার কেড়ে নেন। তাঁরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বলে পরিচয় দেন। পরে বাধা প্রদানে নেতৃত্ব দেওয়া একজনের নাম হযরত আলী বলে জানতে পারেন। তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেখানকার আহ্বায়ক বলে দাবি করছিলেন। এতে তাঁদের পথসভাটি পণ্ড হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তেঁতুলিয়া থানা-পুলিশ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে জানিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের বাসিন্দা ও কলেজছাত্র হযরত আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে সভাটি হচ্ছিল, সেখানে বিগত দিনের ফ্যাসিস্টদের দোসররা উপস্থিত থাকায় স্থানীয় লোকজন বাধা দিয়েছিলেন। আমি সেখানে বিষয়টি সমাধান করতে গিয়েছি মাত্র। অথচ এখন আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি তেঁতুলিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কিন্তু সেখানে কোনো কমিটি নেই।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত কবীর বলেন, সিপিবির সভার একেবারে শেষ দিকে কতিপয় ছেলে এসে ‘এই তোমরা তো আওয়ামী লীগের দোসর ছিলা’ বলে বাধা দেয়। এ সময় কথা–কাটাকাটি ও ছোটখাটো ধাক্কাধাক্কি ছাড়া কিছুই হয়নি। তিনি বলেন, ‘হযরত আলী নোন ফেস (পরিচিত মুখ), তাঁকে সবাই চেনেন। আমি নিজেও সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ তখন হযরত আলীর নাম বলতে পারেনি, এমনকি ওরাও (সিপিবির নেতারা) বলেনি। এখন হযরতের নাম কীভাবে বলতেছে, বুঝতেছি না।’