বিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে ছিল শিক্ষার্থীরা। সবার হাতে ফুল। মাঠে রাখা ফুল দিয়ে সাজানো একটি সাদা রঙের গাড়ি। এসব আয়োজন ছিল মাহফুজা বেগমের জন্য। তিনি গাইবান্ধার চণ্ডীপুর আলহাজ তহুরুন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তাঁর ৩৩ বছরের দীর্ঘ চাকরিজীবনের শেষ দিন ছিল রোববার।
বিদায়ী শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে এ আয়োজন করেন শিক্ষার্থী ও তাঁর সহকর্মীরা। প্রথমে মাহফুজার গলায় ফুলের মালা পরানো হয়। তিনি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। তারপর গাড়ির কাছে যাওয়া পর্যন্ত দুই পাশ থেকে ফুল ছিটিয়ে তাঁকে বিদায় দেওয়া হয়। গাড়িতে ওঠার পরও শিক্ষার্থীরা দুই পাশ থেকে ফুল ছিটায়।
কর্মজীবনের শেষ দিনে এ ধরনের আয়োজন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মাহফুজা বেগম। তিনি বলেন, ‘এ আয়োজন আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিদায়টা এমন সুন্দর হবে, কখনো ভাবিনি। যত দিন বেঁচে থাকব, সবার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।’
এর আগে সকালে বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভা করা হয়। সেখানে বিদায়ী শিক্ষকের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক, উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) মেহেদী মোস্তফা, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্যামল কুমার বর্মন, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, নিতাই চন্দ্র বর্মন, মনজুরুল ইসলাম, রওশন আরা বেগম, সাজ্জাদুর রহমান, শিক্ষার্থী মোবাশ্বিরা ইসলাম, ছামিয়া ইসলাম, মৌমিতা ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘১৯৯১ সালের ৫ মার্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন মাহফুজা আক্তার। একজন আদর্শ শিক্ষকের যেসব গুণ থাকা দরকার, মাহফুজার মধ্যে তাঁর সবগুলোই ছিল। আমি তাঁর জীবনের সাফল্য কামনা করছি।’