শিক্ষকদের ওপর হামলা ও শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ মঙ্গলবার কোনো ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহন করা বাস চলেনি। ক্যাম্পাস ফাঁকা। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান করছেন। উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি।
সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস পরিবহন পুলে বসে আছে। শিক্ষার্থী নিতে বাস বের হয়নি। তবে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাস চলাচল করেছে। ১৯টি বিভাগে সশরীর কোনো ক্লাস হয়নি। শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। কোনো পরীক্ষা হয়নি। কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিজ নিজ দপ্তরে আড্ডা দিচ্ছেন। কেউ কেউ গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন।
বেলা একটায় সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির তাঁর দপ্তরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল থেকে দপ্তরে বসে আছি। কাজ করছি।’ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, প্রশাসনিক কাজ চলছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের বলেন, ‘উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন, কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান, আইকিউএসি (ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল) পরিচালক রশিদুল ইসলাম শেখ ও প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ, গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। শিক্ষকদের শারীরিক নিপীড়নের প্রতিবাদে আমরা ক্লাস বর্জন করেছি।’
শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, আইকিউএসি পরিচালক ও প্রক্টরের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতি। আজ বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে ওই মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে ২৮ এপ্রিল শিক্ষকদের ওপর হামলার বিভিন্ন ছবি প্ল্যাকার্ডে তুলে ধরা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, শিক্ষক সমিতির সাবেক তিন সভাপতি দুলাল চন্দ্র নন্দী, মোহাম্মদ আইনুল হক, মো. শামিমুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রমুখ। বেলা একটায় মানববন্ধন শেষ হয়।
মানববন্ধনে মো. আবু তাহের তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে কোষাধ্যক্ষের গাড়ি আটকে দেওয়ার সময় আইকিউএসির পরিচালক মো. রশিদুল ইসলাম শেখ বাধা দেন। ২৮ এপ্রিল বেলা ১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্য বহিরাগত নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা করেন। এরই প্রতিবাদে আমরা তাঁদের অপসারণ চাই। তাঁদের গ্রেপ্তার চাই।’