ট্রানজিট চুক্তির আওতায় তামাবিল দিয়ে কলকাতার পণ্য গেল মেঘালয়ে

ট্রানজিট চুক্তির আওতায় তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে মেঘালয়ে পণ্য পরিবহন শুরু। বুধবার দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে তামাবিল স্থলবন্দর ব্যবহার শুরু করেছে ভারত। আজ বুধবার দুপুরে কলকাতা থেকে আসা ১৬ দশমিক ৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপসহ একটি কনটেইনারের চালান সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়।

কাস্টমস কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহন করতে দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া (এসিএমপি) চুক্তি হয়েছিল। এরপর প্রথমবার ২০২০ সালের জুলাইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে পণ্য পরিবহন শুরু হয়। তখন কলকাতা বন্দর থেকে পণ্যবাহী নৌযান চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল। সেখান থেকে স্থলপথে পণ্য আগরতলায় নেওয়া হয়। কিন্তু করোনা মহামারিসহ নানা জটিলতায় গত চার বছরে চুক্তির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পরে ভারতের পক্ষ থেকে চারটি রুটে পরীক্ষামূলক চলাচলের অনুমতি চাওয়া হয়। আপাতত দুটি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন করতে দিতে রাজি হয় বাংলাদেশ। তার পরিপ্রেক্ষিতেই মোংলা বন্দর ব্যবহারবিষয়ক চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে চারটি ‘ট্রায়াল রানের’ প্রথমটি শুরু করেছে কলকাতা বন্দর।

এরই অংশ হিসেবে ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশি নৌযান (কার্গো) এমভি রিশাদ রায়হান পণ্যবোঝাই দুটি কনটেইনার নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে। দুটি কনটেইনারের একটিতে ইলেকট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬ দশমিক ৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপ ও অন্যটিতে ২৪৯ প্যাকেজে ৮ দশমিক ৫ মেট্রিক টন প্রিফোম ছিল। যার মধ্যে ইলেকট্রো স্টিল কাস্টিং লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজের ১৬ দশমিক ৩৮০ মেট্রিক টন লোহার পাইপভর্তি কনটেইনারটি তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়েছে। অন্যটি কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসামে যাওয়ার কথা আছে।

সিলেটে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নীরজ কুমার জয়সওয়াল দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে ব্যবসায়িক গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনীতি ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

নীরজ কুমার আরও বলেন, ২০২২ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ১৩তম ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট গ্রুপ অব কাস্টমস (জেএসসি) বৈঠকের পর ট্রায়াল রান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারই প্রথম ট্রায়ালের পণ্য মোংলা বন্দর দিয়ে খালাসের পর তামাবিল দিয়ে মেঘালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সিলেটের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত এসিএমপি ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাইলফলক সৃষ্টি হলো। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।