পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ঘুরে ঢুকে হাত-পা বেঁধে ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের মধ্যটিয়াখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম সাইদুল ইসলাম সরদার (৩৫)। তিনি একই গ্রামের মৃত তৈয়ব আলী সরদারের ছেলে। তিনি ধানের ব্যবসা করতেন; পাশাপাশি জমি বেচাকেনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
সাইদুলের বড় ভাই মো. শাহজালাল খোকন সরদার বলেন, তাঁর ছোট ভাই গতকাল সন্ধ্যার পর কলাপাড়া পৌরশহর থেকে মধ্যটিয়াখালী গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। এরপর হাত-মুখ ধুয়ে নিজ ঘরেই অবস্থান করছিলেন। একদল দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে সাইদুলের হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে মাটিতে ফেলে পেটের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। পরে ঘটনাস্থলেই তাঁর ভাই মারা যান।
সাইদুলের দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, দুষ্কৃতকারীরা সাতজন ছিল। তাদের মুখ কালো কাপড় বাঁধা ছিল। কেন এবং কী কারণে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে, তা তিনি বুঝে উঠতে পাচ্ছেন না।
স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইদুল ইসলাম সরদার মধ্যটিয়াখালী গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা বেগমকে নিয়ে বসবাস করতেন। দুই বছর আগে খাদিজাকে বিয়ে করেন সাইদুল। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। গত বৃহস্পতিবার ৩৩ শতাংশ জমি বিক্রির ৩০ লাখ টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সর্বশেষ ঝগড়া হয়।
সাইদুলে বড় বোন তাজেনুর বেগম বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে আপন লোকেরাই জড়িত। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।’
সাইদুল নামের একজনকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয় বলে জানান কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, তাঁকে (সাইদুলকে) হাত-পা বেঁধে আঘাত করা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে ভুঁড়ি বের হয়ে গেছে।
কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা বেগম একেক সময় একেক কথা বলছেন। আমরা তাঁকে নজরদারিতে রেখেছি।’
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ধরার চেষ্টা চলছে। নিহত যুবকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।