বগুড়ায় ইফতারের ঘরোয়া কিংবা দাওয়াতের আয়োজনে টক দইয়ের ঘোল একটি অপরিহার্য পদ। এ ছাড়া যেন ইফতারে পূর্ণতা আসে না। এবার গরমে রোজা শুরু হওয়ায় এই ঘোলের কদর আরও বেড়েছে।
একসময় বগুড়ায় টক দইয়ের সুস্বাদু ঘোল বড় হাঁড়ি করে হোটেলে বা ফুটপাতে বসে বিক্রি করা হতো। এখন বোতলজাত ‘ঘোল’ বিক্রি হচ্ছে। আবার কেউ কেউ টক দই কিনে বাড়ি নিয়ে ঘোল তৈরি করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা, বড় মসজিদ লেন, ফতেহআলী বাজার থেকে শুরু করে শহরের অলিগলিতে দইওয়ালারা ভাঁড়ে করে টক দই বিক্রি করছেন। ফুটপাত ছাড়াও শহরের সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, ফতেহ আলী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার অভিজাত দোকানগুলোয় বোতলজাত ঘোল এবং ঘোল তৈরির টক দই বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতে প্রতি হাঁড়ি টক দই (আনুমানিক ৫০০ গ্রাম) ১৪০ টাকা এবং শোরুমে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের মিঠাই মেলা ছাড়াও শেরপুর দই ঘর, আলহাজ মহরম আলী দই ঘর, আদি মহরম আলী দই ঘর, রফাত দই ঘর, চিনিপাতা দই, ফুড ভিলেজ, আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল, শ্যামলী হোটেল, এশিয়া সুইটস, দইঘর, গৌর গোপালের দই ঘরে টক দই ছাড়াও বোতলজাত ঘোল বিক্রি হচ্ছে। ২৫০ মিলিলিটার ঘোল ৫০ টাকা, আধা লিটারের ঘোল ১০০ টাকা এবং এক লিটার ঘোল ২০০ টাকা।
কবি ও কথাসাহিত্যিক বজলুল করিম বাহার বলেন, বগুড়ার দইয়ের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে প্রসিদ্ধ ঘোলের সুনাম। পঞ্চাশের দশকে শহরের আকবরিয়া হোটেল ছাড়াও ফতেহ আলী বাজারের ঘোলে হাঁড়ি নিয়ে বসতেন ঘোষেরা। লোকজন সেই ঘোল কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। এক গ্লাস ঘোল পাঁচ পয়সায় বিক্রি হতো। আকবরিয়া হোটেলে এখনো ঘোল বিক্রি হয়। ধনী-গরিব সব পরিবারের ইফতার আয়োজনে টক দইয়ের ঘোলের জুড়ি নেই। সারা দিন রোজা রাখার পর টক দইয়ের ঘোল তৃপ্তি মেটায়, হজমে সাহায্য করে।