নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ দেওয়া নমুনা প্রতীক আইসক্রিম (বাঁয়ে) ও ব্যালট পেপারে ছাপা আইসক্রিম
নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ দেওয়া নমুনা প্রতীক আইসক্রিম (বাঁয়ে) ও ব্যালট পেপারে ছাপা আইসক্রিম

বগুড়া সদরে নির্বাচন

ভুল প্রতীকেই ভোট গ্রহণের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন

বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালটে ভুল প্রতীক থাকায় গত ২৯ মে ভোট গ্রহণ চলাকালে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীকালে ভুল প্রতীকেই ৯ জুন স্থগিত ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৬ জুন হাইকোর্টে রিট করেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল ইসলাম। পরে হাইকোর্ট ৯ জুন ভোট স্থগিত ও সঠিক ব্যালটে নির্বাচন সম্পন্ন করে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে অবগত করার আদেশ দেন।

গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাচন যে পর্যায় থেকে স্থগিত করা হয়েছিল, সেই পর্যায় থেকে শুরু করে আইন ও বিধান অনুসরণপূর্বক পূর্বনির্দেশনা মোতাবেক ২৭ জুলাই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে বগুড়ার অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তাকে সরিয়ে জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আদেশে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল ইসলামকে ইতিপূর্বে বরাদ্দ করা কাঠিসংবলিত আইসক্রিম প্রতীকের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত নমুনার পোস্টারে মুদ্রিত আইসক্রিম প্রতীক বরাদ্দপূর্বক প্রচার–প্রচারণা সম্পন্ন করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের আদেশসংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পর গতকাল রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল ইসলামকে নতুন করে প্রতীক বরাদ্দের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সম্মেলনকক্ষে উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি দেন। সেখানে প্রার্থী ইফতারুল ইসলাম উপস্থিত না হলে তাঁর বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া কুলফি আইসক্রিমসংবলিত প্রতীকের চিঠি ফটকে সেঁটে দেওয়া হয়।

ইফতারুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করে ভুল প্রতীকেই ভোট গ্রহণের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট আগে বরাদ্দ করা প্রতীকে (কাঠি আইসক্রিম) নির্বাচন সম্পন্ন করে চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টকে অবগত করার আদেশ দিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন সম্পন্ন না করে হাইকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে। এখন আবার ভুল প্রতীকেই নির্বাচন সম্পন্ন করার তোড়জোড় শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আবারও আদালতের দ্বারস্থ হবেন তিনি। কাঠি আইসক্রিম প্রতীকের ব্যালট না ছাপা পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।

বগুড়ার জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতীক নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে ভোটারদের কাছে যাতে যেতে পারেন, এ জন্য সময় দিয়ে ৯ জুন ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ইফতারুল ইসলাম হাইকোর্টে রিট করলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ৯ জুনের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এখন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ২৭ জুলাই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।