নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মাহিয়া মাহি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে
নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মাহিয়া মাহি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে

মাহিয়া মাহি বললেন, ‘চৌধুরী সাহেবের হয়তো অনেক টাকা আছে, কিন্তু মন নেই’

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণার মাঠে নেমে বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন মাহিয়া মাহি। বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি ভোটারদের আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হুমকিতে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। এবার তিনি সিনেমার স্টাইলে এই প্রার্থীকে নিয়ে বক্তব্য দিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের একটি পথসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে মাহি বলেন, ‘সিনেমাতে দেখেছি এই চৌধুরী সাহেব (ওমর ফারুক চৌধুরী)। আমরা মেহনতি মানুষ। আমরা আপনার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। কারণ, মেহনতি মানুষের সঙ্গে সাধারণ জনগণ থাকেন। চৌধুরী সাহেবের হয়তো অনেক টাকা আছে, কিন্তু তাঁর মন নেই, দিল নেই। তিনি মানুষকে ভালোবাসতে জানেন না। সে আপনাদের সঙ্গে টং দোকানে বসে চা খেতে পারেন না। কারণ, তাঁর তো অনেক টাকা। তিনি এসি রুমে বসে থাকবেন। আর মানুষকে শাসন করবেন, ভয় দেখাবেন ও শোষণ করবেন।’

বক্তব্যের একপর্যায়ে মাহিয়া মাহি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি কেন? কারণ হচ্ছে, আমি এই জমিদারি প্রথার অবসান চাই। এই স্বাধীন বাংলাদেশে জমিদারি প্রথার কোনো ভাত নেই। এই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন থাকতে চায়। নিজের খেয়ে, নিজের পরে, নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। কাউকে ভয় পেয়ে বাঁচতে চায় না।’

প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন মাহিয়া মাহি। গতকাল রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে

সবাইকে নিজের ট্রাক প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাহি বলেন, ‘চৌধুরীকে ৭ তারিখ কাঁদতে হবে। কেন কাঁদবেন? কারণ, তিনি সেদিন বুঝতে পারবেন, তানোর-গোদাগাড়ীর মেহনতি মানুষ, কৃষক–শিক্ষক তাঁকে ভালোবাসেন না। তিনি শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করান। শিক্ষককে মারেন। তিনি এত বড় জমিদার সাহেব হয়ে গেছেন। আমাদের শক্তি বেশি না, জমিদারের শক্তি বেশি? আমরা সবাই যদি একজোট হই, তাহলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারব। আমরা ৭ তারিখ এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করব।’

রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী

ভোটারদের নতুন পোশাকে সেজেগুজে ভোট দিতে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাহি আরও বলেন, ‘আপনারা গোপনে কাকে ভোট দিচ্ছেন, এটা কেউ জানতে পারবে না। তাহলে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ৭ জানুয়ারি সাজুগুজু করে সবাই নতুন পোশাক পরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন। গোপনে আপনার মন যাকে পছন্দ করে, মন থেকে তাঁর হয়ে ভোট দিবেন। আরও একবার যদি আপনারা ৭ তারিখ ভুল করেন, তাহলে কিন্তু আগামী পাঁচ বছর আবারও কপাল থাবড়াইতে হবে। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করার সুযোগ এখনই।’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন মাহিয়া মাহি। না পেয়ে রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী আবারও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। ওমর ফারুক চৌধুরী ও মাহিয়া মাহি ছাড়াও আরও আটজন প্রার্থী রয়েছেন এ আসনে।

প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন মাহিয়া মাহি। গতকাল রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে

১৮ ডিসেম্বর ট্রাক প্রতীক পেয়ে সন্ধ্যায় মাহিয়া মাহি তানোরের মুন্ডুমালা এলাকায় নিজের নানাবাড়ি থেকে প্রচারণা শুরু করেন। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন তিনি। মাহিকে পেয়ে উৎসুক জনতাও ভিড় জমাচ্ছেন। এই প্রার্থীকে ঘিরে ছবিও তোলা হচ্ছে। গতকাল সারা দিন তিনি পাঁচন্দর ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন।