কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জন্ম পাবনায়! শুনতে অবাক লাগলেও একটি জন্মসনদ সেই তথ্যই বলছে। জেলার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে জন্মসনদটি নিবন্ধন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জন্মসনদের ছবি ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সার্ভারে জন্মসনদটি ছিল। বিষয়টি জানাজানির পর দুপুর থেকে সার্ভারে জন্মসনদটি আর পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর দাবি, শুধু জাস্টিন ট্রুডো নন, ইউপির কম্পিউটার অপারেটর নিলয় হোসেন টাকার বিনিময়ে এমন বহু ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করেছেন। এ ঘটনার পর নিলয় গা ঢাকা দেওয়ায় এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জন্মসনদে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ব্যক্তির নাম জাস্টিন ট্রুডো। জন্মস্থান পাবনা। জন্ম ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর। মাতার নাম মার্গারেট ট্রুডো, মাতার জাতীয়তা বাংলাদেশি। পিতার নাম পিয়েরে ট্রুডো, পিতার জাতীয়তাও বাংলাদেশি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের শেষে আহম্মদপুর ইউপির চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিয়া মারা যান। তখন ইউপির জন্ম-মৃত্যুসনদ, নাগরিক সনদসহ সব কাগজপত্র দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে সচিব আওলাদ হোসেন ও কম্পিউটার অপারেটর নিলয় হোসেনের ওপর। এর পর থেকেই তাঁরা যোগসাজশ করে টাকার বিনিময়ে ভুয়া জন্ম-মৃত্যুসনদ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি এক ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে জাস্টিন ট্রুডোর নামে জন্মসনদ তৈরির আবেদন করলে কম্পিউটার অপারেটর নিলয় হোসেন তা তৈরি করে দেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
এ বিষয়ে জানতে কম্পিউটার অপারেটর নিলয় হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন বলছেন, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
তবে ইউপি সচিব আওলাদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই লজ্জার। আমি এসব ঘটনার কিছুই জানি না। সার্ভারের ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড আমার কাছে থাকলেও কম্পিউটার অপারেটর কোনোভাবে সেটি জেনেছে। তিনি গোপনে বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। আমি এ ঘটনায় দায়ী নই।’
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এটি বড় ধরনের অপরাধ। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।