প্রায় সাড়ে ৮০০ খুদে গণিতবিদদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে কুষ্টিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসব চলছে। আজ শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে
প্রায় সাড়ে ৮০০ খুদে গণিতবিদদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে কুষ্টিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসব চলছে। আজ শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে

কুষ্টিয়ায় চলছে গণিত উৎসব, আনন্দে মেতেছে খুদে শিক্ষার্থীরা

আবহাওয়া বার্তায় আগাম খবর ছিল শৈত্যপ্রবাহের। ভোর থেকেই কনকনে শীত। তাই বলে থেমে থাকবে খুদে শিক্ষার্থীদের গণিতের উৎসব? মোটেই না। ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে শীতের মধ্যেই খুদে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে। প্রায় সাড়ে ৮০০ খুদে গণিতবিদ আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসবে অংশ নিয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও শিক্ষা) মিজানুর রহমান, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম মুসা কবির। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক ও গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য অধ্যাপক হায়দার আলী বিশ্বাস।

উদ্বোধনী পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মুন্সী কামরুজ্জামান, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কুষ্টিয়া শাখার ব্যবস্থাপক শাহিনুর রহমান, কুষ্টিয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুজ্জামান ও প্রথম আলোর কুষ্টিয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদী হাসান।

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় গণিত উৎসবের এ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। আয়োজনে সহযোগিতা করে প্রথম আলো কুষ্টিয়া বন্ধুসভা।

গণিত উৎসবে অংশ নিতে সকাল থেকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাজির হয় পাবনা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৮০০ শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে আসেন অভিভাবকেরাও। সকাল সাড়ে আটটার মধ্যেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণে। অনলাইনে প্রাথমিক বাছাইপর্বে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা উৎসবে যোগ দেয়। উৎসবে গণিত অলিম্পিয়াড, দ্বিমিক প্রকাশনীর স্টলও বসেছে। সেসব স্টল ঘুরে দেখেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

ঠান্ডা বাতাস মাড়িয়ে জবুথবু হওয়া শীতের মধ্যেই খুদে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে

ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী দাইয়ান কবির বলে, ‘ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠছি। তারপর বন্ধুদের সাথে ভেন্যুতে আসা। এবারই প্রথম আসছি। খুবই ভালো লাগছে। সারা দিন আনন্দ করব।’

আরেক শিক্ষার্থী ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুলের ছাত্র নাজমুস সাকিব বলে, ‘এবারই প্রথম অংশ নিয়েছি। আশা করি, ঢাকায় যেতে পারব।’

উদ্বোধনী পর্বে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, গণিত ও বিজ্ঞানে যে জাতি অগ্রসর, সে জাতি তত বেশি উন্নত। গণিত বিজ্ঞানের ভাষা, যুক্তির ভাষা। জাতির অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য গণিতের বিকল্প নেই।

উদ্বোধনের পর আজ সকাল ১০টা ২০ মিনিট থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে গণিতের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার পর বন্ধুসভার সদস্যদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর হবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব। পাশাপাশি চলবে খাতা মূল্যায়নের কাজ।