নওগাঁয় সাবেক প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার মামলা

শহীদুজ্জামান সরকার
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা, হয়রানি ও হুমকির অভিযোগে মামলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁর আমলি আদালত-৪-এ মামলাটি করেন পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার হরিরামপুর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা শামসুল হক নামের এক ব্যক্তি।

বাদীর আইনজীবী মনসুর আলী প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকারকে এক নম্বর আসামি করে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অন্যরা হলেন নজিপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র ও পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবির চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ (অরুণ), নজিপুর পৌরসভার সরদারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা রেজাউল মামুদ (স্বপন) ও মোজাহারুল ইসলাম। আদালত বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার হরিরামপুর মৌজায় শামসুল হক ওয়ারিশ সূত্রে ১৫ শতক জমি ২০১৬ সাল থেকে ভোগদখল করে আসছিলেন। ওই বছরেই সম্পত্তিটিতে তিনটি টিনের ঘর নির্মাণ করেন শামসুল হক।

ওয়ারিশসূত্রে জমি পাওয়ার পর থেকেই নজিপুর সরদারপাড়ার রেজাউল মামুদ ও মোজাহারুল ইসলাম ওই সম্পত্তি তাঁদের বলে দাবি করে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করতে থাকেন। পরে তাঁরা নওগাঁ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার ও নজিপুর পৌরসভার মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরীর ছত্রচ্ছায়ায় জমি দখলের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে বাদী (শামসুল হক) বিরোধ নিরসনে শহীদুজ্জামান সরকারের কাছে যান। তিনি ওই জমির দখল বুঝে দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বাদী ওই জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করলে আদালত বিরোধপূর্ণ ওই জমির ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।

মামলার আরজিতে আরও বলা হয়েছে, চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকারের নির্দেশে পত্নীতলা থানা–পুলিশ শামসুল হক ও তাঁর ছেলেকে থানায় আট ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। মিথ্যা মামলা ও হত্যার হুমকি দিয়ে জোর করে স্ট্যাম্পে এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেয়। ওই ঘটনার পর থেকে রেজাউল মামুদ ও মোজাহারুল ইসলাম অবৈধভাবে জমি দখল করে আছেন।

আইনজীবী মনসুর আলী বলেন, শামসুল হকের মতো শত শত মানুষ শহীদুজ্জামান সরকারের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। এত দিন তাঁরা কেউ মুখ খুলতে পারেননি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখন তাঁরা শহীদুজ্জামান সরকারের বিচার চান।