গাজীপুরের টঙ্গীতে ৮ কর্মকর্তার পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
একপর্যায়ে বহিরাগত ব্যক্তিদের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আশপাশের চারটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আহত চার শ্রমিক হলেন ব্রাভো অ্যাপারেলস ম্যানুফ্যাকচার লিমিটেড কারখানার সুইং সেকশনের অপারেটর কুলসুম আক্তার, শরিফুল ইসলাম, রানা রঞ্জিত আলামিন ও নাঈম। তাঁরা টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আহত চারজন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের পিঠে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে তাঁদের কারও অবস্থা গুরুতর নয়।
ছুটি ঘোষণা করা কারখানাগুলো হলো—টঙ্গীর চেরাগআলী এলাকার ড্রেসম্যান ফ্যাশনওয়্যার লিমিটেড, মেঘনা রোড এলাকায় এমট্রানেট গ্রুপের ব্রাভো অ্যাপারেলস ম্যানুফ্যাকচার লিমিটেড, গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও পিনাকি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এ জি ড্রেসেস লিমিটেড কারখানা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮ কর্মকর্তার পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবিতে আজ সকাল ১০টা থেকে যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা কারখানাটির সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বেলা ১১টার দিকে আরও লোকজন জড়ো করতে পাশের এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের ডাকেন। তবে কারখানাটির শ্রমিকেরা বিক্ষোভে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেখানে ভাঙচুর চালানো হয়। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পাশের ব্রাভো অ্যাপারেলস লিমিটেড ও এজি ড্রেসেস লিমিটেড কারখানায় গিয়ে তাঁদের আন্দোলনে যোগ দিতে বলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বাধা দেন স্থানীয় কিছু বহিরাগত। এ নিয়ে বহিরাগত ব্যক্তিদের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। পরে শ্রমিকেরা আবার যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
ব্রাভো অ্যাপারেলস ম্যানুফ্যাকচার লিমিটেড কারখানার আহত শ্রমিক কুলসুম আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কারখানা ছুটি দেওয়ার পর তিনি বাসায় ফিরছিলেন। এরই মধ্যে দেখেন, কিছু লোক তাঁদের শ্রমিক ভাইদের ধাওয়া দিচ্ছেন। একপর্যায়ে তাঁদের মারধর শুরু করেন। তাঁরও পিঠে আঘাত করা হয়েছে। তিনি দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। যাঁরা তাঁদের আক্রমণ করেছেন, তাঁরা কেউ শ্রমিক নন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলন শুরু হয় যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানা থেকে। কারখানাটির শ্রমিকেরা অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দিতে ডাকলে নিরাপত্তা বিবেচনায় চারটি কারাখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে বসে দাবি মানার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বেলা দুইটার দিকে শ্রমিকেরা শান্ত হয়ে বাসায় ফিরে যান। তবে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন।