বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ: মির্জা ফখরুল

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার লুটপাট করে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে বিএনপি আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ লুটপাট করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এখন আওয়ামী লীগ তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। এখন তারা ছদ্মবেশে আবার ওই একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই অবৈধ সরকার, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, যাদের কোনো ম্যানডেট নেই, তাদের ক্ষমতায় থাকতে দিলে সেটা বাংলাদেশের জন্য ভয়ংকর হবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আপনারা খবরের কাগজে দেখছেন, পুলিশের সাবেক আইজি (বেনজীর আহমেদ) শুধু ১৭ শ কোটি টাকার নিজস্ব সম্পদ তৈরি করেছেন। এরপর আরও নাকি হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ আছে। এভাবে সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত করে তারা তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।’

গণমাধ্যমের ওপর সরকারি লোকজন চেপে বসেছেন অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিকেরা এখন সত্য কথা লিখতে পারেন না। কেউ কথা বলতে পারেন না। দেশের সুশীল সমাজ বলছে, বাংলাদেশ একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে এখন কথা কইতে মানা, বলতে মানা, এমন অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে।’

সংসদ নির্বাচনের সময় কারাবন্দী বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা দেন বিএনপির মহাসচিব। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কখনোই অন্যায়কে চিরস্থায়ীভাবে সহ্য করেনি। জনগণ সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। আমরা ১৫-১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম করছি। এ লড়াইয়ে আমাদের অনেক ভাই শহীদ হয়েছেন। অনেক ভাই কারাগারে নির্যাতিত হয়েছেন। আমাদের অনেক ভাই গুম হয়ে গেছেন। তাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সংগ্রামটা আমাদের ন্যায়ের সংগ্রাম, আমাদের সত্যের সংগ্রাম, আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সংগ্রাম। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা যে আন্দোলন করছি, একটা সত্যের পক্ষের আন্দোলন, এই আন্দোলন হচ্ছে ১৯৭১ সালে যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেই চেতনার আন্দোলন। আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর হয়ে গেছে, এখনো আমাদের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। কী একটা অদ্ভুত ঘটনা! যাঁরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, যাঁরা ওই সময় গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, তাঁদের হাতেই আজকে গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে।’

এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির ৭৯ নেতা-কর্মীকে সংবর্ধনা দেন বিএনপির মহাসচিব। এ সময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব (দুলু), সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।