কম্বল উপহার পেয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন উচ্ছ্বসিত মানুষেরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামে
কম্বল উপহার পেয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন উচ্ছ্বসিত মানুষেরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামে

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগ

‘খুপই শীত লাইগচোলো, কম্বল গাইদি এবেড্ডা ভালোই ঘুম হবেনে’

‘শীতকাল আসলিই কানে শুনি কারা নাকি গরিপ লোকদের কম্বল দেয়। তেবে, আমরা কুনুবারই তা পাইনে। তুমরাই পোত্থম নতুন কম্বল দিলে। জাড়ের কাপুনিত্তি এবেড্ডা ওম পাবুনি।’

নতুন কম্বল হাতে পেয়ে এভাবে কথাগুলো বলছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেলগাছি মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আখিরন নেছা। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বেলগাছি মুসলিমপাড়া ও বিকেলে চাঁদপুর, ট্যাংরামারী ও খেজুরতলা গ্রামের ২২০ অসহায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।

প্রথম আলো চুয়াডাঙ্গা বন্ধুসভার সদস্যরা শীতবস্ত্র বিতরণে সহযোগিতা করেন। এর আগে দুই দিন ধরে তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হতদরিদ্র মানুষ নির্বাচন করে কম্বলের টোকেন দিয়ে আসেন। বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় জিননূরাইন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আশপাশের বাসিন্দাদের পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের হাতেও কম্বল তুলে দেওয়া হয়।

খেজুরতলা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘কম্বলের জন্যি যারা ইর-উর (এর–ওর) দুয়ারে ছুটে বেড়ায়, শুদো তারাই পায়। আমাগের কপালে জোটে না। তুমরা বাপু বাড়ি বাড়ি যাইয়ে খুঁজে খুঁজে আমাগের টোকেন দিয়ে আইসলে। আবার মানান দেকে কম্বল দিলে। ইতি আমি খুপ খুশি হইচি। জাড় এবেড্ডা ক্যারাম কইরে পারে দেকচি।’
কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বেলগাছি জিননূরাইন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি জহুরুল ইসলাম ও শিক্ষক ইয়াছিন আলী, মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনজুর আহমেদ, খেজুরতলা জামে মসজিদের ইমাম আমিনুল ইসলাম ও সমাজসেবক তসলিম আলী।

কম্বল পেয়ে খুশি শিশুরা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় জিননূরাইন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে

চুয়াডাঙ্গা প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সহসভাপতি মোহাইমেনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সানজিদ ইসলাম, সাবেক সহসভাপতি রাহিমা খাতুন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আল জান্নাত, সদস্য তানভীর ইসলাম, রুহুল আমীন, নুসরাত জাহান, তাসনিয়া পারভীন বিতরণকাজে সহযোগিতা করেন।

বেলগাছি মুসলিমপাড়া জিননূরাইন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে কম্বল নিতে এসে ৯৫ বছর বয়সী আবুল হোসেন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। নতুন কম্বল হাতে পাওয়ার পর তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাসখানে ধরে খুপই শীত লাইগচোলো। খুপ কষ্টে সুমায় পার কইরছিলাম। কম্বল পাইয়ে খুপ ভালো লাগজে। গাইদি এবেড্ডা ভালোই ঘুম হবেনে।’

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে। হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল, হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে সহায়তার অর্থ পাঠাতে পারেন: ০১৭১৩–০৬৭৫৭৬এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। এ ছাড়া বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন। এ পর্যন্ত বিকাশের মাধ্যমে অনুদান এসেছে ৭০ হাজার ৪৯ টাকা। আর ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এসেছে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮০ টাকা।