রৌমারী সীমান্তে অচল সড়ক সংস্কার করল বিজিবি ও ছাত্র-জনতা

বিজিবি ও ছাত্র–জনতা স্বেচ্ছাশ্রমে এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করেন। বুধবার কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ইজামারী সীমান্তে
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বিজিবি মোড় থেকে ইজামারী ক্যাম্পের দূরত্ব ১ কিলোমিটার। কাঁচা সড়কটি উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ, সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি। সংস্কারের অভাবে বৃদ্ধ রোগী, স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ উপজেলার চার গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এবং টহলরত বিজিবির সদস্যরা দুর্ভোগের শিকার হতেন।

সড়কটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন দপ্তরসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো সুফল মেলেনি। অবশেষে আজ বুধবার স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি মাটি ফেলে সংস্কার করেছেন বিজিবি ও ছাত্র-জনতা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সড়ক সংস্কারে কাজ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৭ সালের বন্যার সময় রাস্তাটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর স্থানীয় ব্যক্তিরা চাঁদা তুলে রাস্তাটি সংস্কার করেন। কিন্তু গত বন্যায় রাস্তাটি ডুবে গিয়ে উপজেলা বিজিবি ক্যাম্প মোড় থেকে ইজামারী পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকা চলাচলে অচল হয়ে পড়েছিল। তখন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে সড়কটি সংস্কারের দাবিতে আবেদন করেও ফল পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়েই স্থানীয় ছাত্র ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বিজিবির সদস্যরা রাস্তাটি নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেন। তাঁরা আশপাশের জমি থেকে অনুমতি নিয়ে মাটি কেটে এনে খানাখন্দগুলো ভরাট করেন।

স্থানীয় ছাত্র ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বিজিবির সদস্যরা আশপাশের জমি থেকে অনুমতি নিয়ে মাটি কেটে এনে খানাখন্দগুলো ভরাট করেন। বুধবার রৌমারীর ইজামারী সীমান্তে

ইজামারী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি এলাকার মানুষের কাছে গলার কাঁটা হয়ে ছিল। এ জনদুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে কাজ করছে ছাত্রসমাজ ও বিজিবির সদস্যরা। এতে এলাকাবাসী চলাচলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবেন।

ছাত্রদের প্রতিনিধি সোলাইমান সরকার বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দের মধ্য দিয়ে বিজিবি সদস্য, স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেছিলেন। এ জনদুর্ভোগ নিরসনে বিজিবি, ছাত্রসমাজ মিলে সড়কটি মেরামত করা হয়। এখন এলাকার মানুষ সড়কটিতে ঝুঁকিমুক্তভাবে চলাচল করতে পারবেন। ফলে কমে আসবে সড়ক দুর্ঘটনা।

রৌমারী ইজামারী বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার মোতাহের আলী বলেন, ‘আমাদের টহল জোরদার করতে ও এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে। এতে সীমান্তে টহল জোরদারসহ এ সড়কে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী মনছুরুল হক বলেন, রাস্তাটির জন্য কোনো বরাদ্দ ছিল না। তাই এত দিন সংস্কার করা হয়নি। বরাদ্দ পেলে তাঁরা রাস্তাটি সংস্কার করে দেবেন।