কোটা সংস্কার আন্দোলন

নেত্রকোনায় দফায় দফায় সংঘর্ষে ইউএনওসহ আহত অর্ধশতাধিক

কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহীদ আব্দুল কদ্দুছ মগড়া সেতু এলাকায় ছ
বি: প্রথম আলো

নেত্রকোনার মদন উপজেলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ইউএনও, এএসপি, ওসিসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ আব্দুল কদ্দুছ মগড়া সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে মালামাল ভাসিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

সংঘর্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খালিয়াজুরী সার্কেল) রবিউল ইসলাম, ওসি উজ্জল কান্তি সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান তালুকদার শামীমসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গুলিবিদ্ধ পাঁচ শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহীদ আব্দুল কদ্দুছ মগড়া সেতু এলাকায়

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলমান কোটা সংস্কারের আন্দোলনে আজ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা। সেই কর্মসূচির সমর্থন জানিয়ে মদন উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে মদন সরকারি কলেজ মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। একই সঙ্গে পুলিশও সেই স্থানে অবস্থান নেয়। বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদের দিকে আসতে থাকেন। পরে পুলিশ ডাকবাংলো মোড়ে ব্যারিকেড দেয়।

পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙেই শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে পাবলিক হলের দিকে রওনা হন। একই সময় আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেন আওয়ামী লীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠন ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা। দুটি মিছিল উপজেলা খাদ্যগুদামের সামনে মুখোমুখি হলে প্রশাসন তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা শহীদ আব্দুল কদ্দুছ মগড়া সেতুর পূর্ব পাড়ে অবস্থান নেন। রাস্তায় গাছ রেখে অবরোধ করলে পৌরসভার সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবরোধের পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করলে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে।

পুলিশ একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানেও শিক্ষার্থীরা হামলা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্যরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হন। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল কান্তি সরকার জানান, ‘এ ঘটনায় আমিসহ ১৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আমাদের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্তি পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।’