সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে দর্শনার্থীদের ভিড়
সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে দর্শনার্থীদের ভিড়

ফুল দেখতে সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে দর্শনার্থীদের ভিড়

দুই পাশে ফুলের রাজ্য। মাঝখানে বিশালাকার পুকুর। তাতে চলছে কায়াকিং। সন্ধ্যায় চালানো হয় পানির ফোয়ারা। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, কামিনী, বেলি, চেরিসহ দেশি-বিদেশি ফুলের সুবাসে ম–ম করছে চারপাশ। মাঠজুড়ে নানা নকশায় লাগানো হয়েছে ফুলগাছ। দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করেছেন এখানে। এ বছর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ফুল উৎসব। সে জন্য এত আয়োজন।

‘ফুলের মতো আপনি ফোটাও গান’ প্রতিপাদ্যে আগামী বৃহস্পতিবার শুরু হবে ফুল উৎসব। এ উপলক্ষে দেশি-বিদেশি ১২৭ প্রজাতির লক্ষাধিক ফুলের সমারোহে ডিসি পার্কটি সাজানো হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। মাসব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। এবার প্রত্যেক দর্শনার্থীর পার্কে প্রবেশের জন্য ৩০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পার্কে কথা হয় চট্টগ্রাম নগরের খুলশী এলাকার বাসিন্দা জাহিদ হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আগেও তিনি এখানে এসেছিলেন। তবে তখন আর এখন অনেক পার্থক্য। পুরো পার্কটা তাঁর কাছে অসাধারণ লাগছে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা এলাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন আবদুস সালাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কয়েকজন বন্ধু মিলে বঙ্গবন্ধু টানেল দেখতে এসেছিলেন। সময় হাতে থাকায় ডিসি পার্কে ঘুরতে আসেন। পার্কটি কল্পনার চেয়েও সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।

গত বছর দখলদারদের উচ্ছেদের পর ১৯৪ একর খাস জমি উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন। এরপর সেখানে গড়ে তোলা হয় ডিসি পার্ক। উচ্ছেদের এক মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো সাত দিনব্যাপী ফুল উৎসবের আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। এতে মানুষের সাড়া পড়ে যায়। তাই এবার দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে ফুল উৎসব।

জেলা প্রশাসন জানায়, এবার নেদারল্যান্ডস থেকে বীজ এনে ফোটানো হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার টিউলিপ ফুল। উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য থাকবে চট্টগ্রামের চিত্রশিল্পীদের প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম। উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থাও থাকবে। আয়োজন করা হবে ঘুড়ি উৎসব, আতশবাজি, পুতুলের নাচ ও জাদু প্রদর্শনী। এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক সময় জায়গাটি ছিল মাদকের আখড়া। গত বছর প্রথমবারের মতো ফুল উৎসবে লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। মানুষের উৎসাহ দেখে এ বছর বৃহৎ পরিসরে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু করতে যাচ্ছি আমরা।’

পার্কটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম বলেন, ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো ফুল উৎসবের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সব মিলিয়ে এবারের উৎসবটি অনেক উপভোগ্য হবে। মূল উৎসবের আগেই দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।