সিলেটের প্রথম বেসরকারি হাসপাতাল জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ। ১৯৯৫ সালে তারাপুর চা-বাগান এলাকায় ৮ দশমিক ৮৯ একর জায়গার ওপর শিল্পপতি সৈয়দ রাগীব আলী এটি প্রতিষ্ঠা করেন। চা-বাগানের সবুজ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ প্রতিষ্ঠানটিকে করেছে অনন্য। শিক্ষার্থীদের জন্য ৯ হাজার ৭৪৯টি বইয়ের সমন্বয়ে অত্যাধুনিক লাইব্রেরি, ল্যাব ও আবাসন সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এখানে চালু করা হয়েছে ডে–কেয়ার সেন্টার। ৩২৯ শিক্ষক কলেজটিতে কর্মরত। এই কলেজের হাসপাতালে ন্যূনতম খরচে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রথম আলো: সিলেটে বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আছে। অন্য কলেজের চেয়ে আপনাদের প্রতিষ্ঠানের ভিন্নতা কী?
অধ্যক্ষ: আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি বিভাগেই পর্যাপ্তসংখ্যক পোস্ট গ্র্যাজুয়েটধারী দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মাধ্যমে পাঠদান করা হয়। এ ছাড়া আধুনিক সুবিধাসংবলিত ৮০০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা, মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং রাজনৈতিক কোলাহলমুক্ত পরিবেশ এখানে আছে। ক্যাম্পাসের ভেতরে শতভাগ হোস্টেল সুবিধা আছে। তাই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্য এ কলেজকেই পছন্দের শীর্ষে রাখছেন।
প্রথম আলো: অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী আপনাদের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। তাঁরা কেন আপনাদের প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিচ্ছেন?
অধ্যক্ষ: আমি মনে করি, আমাদের বিকল্প আমরাই। বিদেশি শিক্ষার্থীরা তাঁদের বন্ধুবান্ধব ও বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মানের ব্যাপারে জেনে ভর্তির জন্য আগ্রহী হচ্ছেন। এ ছাড়া বিদেশি ছাত্রদের জন্য কলেজ-সংলগ্ন চা-বাগানে আছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সংবলিত আন্তর্জাতিক হোস্টেল। পাশাপাশি ছাত্রীদের জন্য কলেজ ক্যাম্পাসেই আছে আলাদা হোস্টেল। এসব কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীরা আমাদের এখানে পড়তে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রথম আলো: শিক্ষার পাশাপাশি আপনারা শিক্ষার্থীদের কোন দিকগুলোয় বেশি গুরুত্ব দেন? আপনাদের কলেজে গবেষণা কিংবা সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন?
অধ্যক্ষ: চিকিৎসা পেশা একটা মহান পেশা। বিষয়টিতে লক্ষ্য রেখে সবার সঙ্গে মানবিক আচরণ তথা রোগীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা অপরিহার্য। আমাদের কলেজে রয়েছে বিএমডিসি অনুমোদিত জার্নাল, যার নাম জালালাবাদ মেডিকেল জার্নাল। এখানে গবেষণা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণও উন্মুক্ত। জার্নালটি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠের জন্য উৎসাহিত করা হয়। কারণ, জার্নালটি পাঠ করলে একজন শিক্ষার্থী চিকিৎসা-সম্পর্কিত বৈচিত্র্যময় বিষয়গুলো সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন। পাশাপাশি নানা সময়ে চিকিৎসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সেমিনার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা মূল শিক্ষার পাশাপাশি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা, ইনডোর গেমসহ নানা সহশিক্ষা কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালিত হয়। এখানে সন্ধানী, ফটোগ্রাফি ক্লাব, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। মূলত সহশিক্ষা কার্যক্রমকে আমরা উৎসাহিত করার পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকি।
প্রথম আলো: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আর সাফল্যে প্রতিষ্ঠানটিকে কোন জায়গায় দেখতে চান?
অধ্যক্ষ: আরও বিশ্বমানের শিক্ষা উপকরণসহ আনুষাঙ্গিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে চাই। আমরা চিকিৎসাশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে একটা মাইলফলক অর্জন করতে চাই।