গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির সদস্যরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরের সব ধরনের প্রশাসনিক কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ক্লাস ও পরীক্ষা চালু আছে।
আজ রোববার সকালে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষকেরা। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা বলছেন, সম্প্রতি বেশ কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা আপগ্রেডেশন পেয়েছেন। তাঁদের বিষয়টি ২৯ মে রিজেন্ট বোর্ডে পাস হওয়ার কথা। অথচ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেননি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ। এ জন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। উপাচার্যকে পাঁচ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আপগ্রেডেশন প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আপগ্রেডেশন কী—জানতে চাইলে শিক্ষকেরা বলেন, আপগ্রেডেশন হলো একজন প্রার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ের পর নতুন বেতন স্কেল ও পদোন্নতি দেওয়া। এ কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আপগ্রেডেশন কমিটি আছে। ওই শিক্ষক যদি পদোন্নতির যোগ্য বলে বিবেচিত হন, তাহলে আপগ্রেডেশন কমিটি তাঁর জন্য রিজেন্ট বোর্ডে সুপারিশ করেন। পরে রিজেন্ট বোর্ড তাঁর আপগ্রেডেশন পাস করে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষক (একজন অধ্যাপক, ৭০ জন সহযোগী অধ্যাপক এবং দুই শতাধিক সহকারী অধ্যাপক) আপগ্রেডেশন পেয়েছেন। আপগ্রেডেশনের পর তাঁরা যে পদ পাবেন, বর্তমানে সে পদের বিপরীতে অন্য শিক্ষক আছেন। অর্থাৎ পদটি আপাতত শূন্য নয়। এ অবস্থায় নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বা নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে একই আপগ্রেডেশন পুনরায় করা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এ কারণে বর্তমানে প্রায় ৩০ জন শিক্ষকের আপগ্রেডেশন বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির একাংশের সভাপতি মিকাইল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রহমতউল্লাহ বেলা দুইটায় প্রেস ব্রিফিং করে তাঁদের দাবিদাওয়া জানিয়েছেন। তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আপগ্রেডেশন বাছাই বোর্ডে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাচাই-বাছাই বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে। গ্রেড অনুযায়ী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব, সহ-উপাচার্য সৈয়দ সামসুল আলম ও কোষাধ্যক্ষ দলিলুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তাঁরা তা ধরেননি। প্রক্টর মো. কামরুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোন কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক। তালা বন্ধ করার বিষয়ে আমি বলতে পারব না। এ বিষয়ে উপাচার্যের দপ্তরে যোগাযোগ করেন।’