হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ খান এবারও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে আজ বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আবদুল মজিদ খানের ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম আহমেদ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
হবিগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১০ জন। তাঁদের মধ্যে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শরীফ উদ্দিন আহমেদের ছেলে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ময়েজ উদ্দিন আহমেদ শরীফ। তিনি পেশায় আইনজীবী। ৩২ বছরের এই যুবক ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আবদুল মজিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার দুই উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মী, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছি। একবাক্যে সবার দাবি, আমি যেন নির্বাচন করি। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। প্রধানমন্ত্রী যেখানে বলেছেন, দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনো বাধা নেই। সে কারণে আমিও মনে করি, আমার প্রার্থী হতে কোনো বাধা নেই।’
এদিকে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসন থেকে এবার দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ ও হবিগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীসহ আটজন। তাঁদের মধ্য থেকে দল মনোনয়ন দেয় হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুশফিক হোসেন চৌধুরীকে। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী আজ বুধবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ এবার দল থেকে মনোনয়ন না পেলেও এই আসন থেকে আজ তাঁর ছোট ভাই গাজী মোহাম্মদ শাহেদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ বিষয়ে গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ বলেন, ‘এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি তাঁর (শাহেদের) একান্ত ব্যক্তিগত। এখানে আমার বা আমার পরিবারের (সাবেক সংসদ সদস্য ফরিদ গাজীর) কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ বিষয়ে গাজী মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‘নেত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য এবারের নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, সেই হিসেবে আমিও প্রার্থী হব। তিনি যদি বলেন, নির্বাচন না করতে, আমি তা-ই করব।’
এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মুশফিক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া আর কোনো প্রার্থী নেই। সেখানে ছায়া বা ডামি প্রার্থী হতে দলের নেতাদের বলেছেন। ঢালাওভাবে প্রার্থী হওয়ার কথা এখানে বলা হয়নি।’
হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর, লাখাই, শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির। তাঁর এ আসনে আজ মনোনয়নপত্র তুলেছেন জাতীয় পার্টির আবদুল মুনিম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দল আমাকে এ আসন থেকে মনোনয়ন তুলতে বলায় আমি আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের বিষয়ে আমার দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমি সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব।’
হবিগঞ্জের চারটি আসনে আজ বুধবার ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী, জাতীয় পার্টি, বিএনএম, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী এবং অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থী।