রাজশাহীতে কিশোরকে অপহরণ ও হত্যা মামলায় এক তরুণ ও তরুণীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া দুজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। এই মামলার অন্য পাঁচ আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাদের বিচার চলছে অন্য আদালতে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রাজশাহী নগরের হেতেমখাঁ সাহাজীপাড়া মহল্লার মো. মঈন ওরফে আন্নাফ (২০) ও হাবিবা কুমকুম ওরফে ঐশী (১৯)। মামলায় মঈনের মা রাজশাহী মহানগর মহিলা দলের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক বিথী খাতুন ও মামা আসামি ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
নিহত মো. সনি (১৬) রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রফিকুল ইসলামের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩ জুলাই ছিল সনির জন্মদিন। সেদিন রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে তাঁকে হেতেমখাঁ সাহাজীপাড়া এলাকায় তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ৯ জনের নামে মামলা করেন তাঁর বাবা।
ঘটনার পর বিথী খাতুন তাঁর ছেলে মঈন এবং তাঁর বান্ধবী হাবিবাকে নিয়ে পালিয়ে যান। ৮ জুলাই রাতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার প্রতাপ গ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। নয়জনের মধ্যে পাঁচজন অপ্রাপ্তবয়স্ক।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, শিশু আইনে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচজনের বিচার চলছে নারী ও শিশু আদালতে। আর প্রাপ্তবয়স্ক চারজনের বিচারকার্য শেষ হয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। রায় ঘোষণার সময় চার আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আসামি মো. মঈন ঘটনাস্থলে ছিলেন না। প্রথম ঘটনাস্থল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ আর দ্বিতীয় ঘটনাস্থল সাহাজীপাড়া। অন্তত ১০ জন সাক্ষী জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। জায়গাটি অন্ধকার ছিল। এ কথা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও স্বীকার করেছেন। এ জন্য এই রায়ের বিষয়ে তাঁর আপত্তি রয়েছে।