প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে প্রশ্ন করছেন একজন পাঠক। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে
প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে প্রশ্ন করছেন একজন পাঠক। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে

‘প্রথম আলো দেশ ও মানুষের কথা বলে’

সমাজের আয়না হিসেবে প্রথম আলো প্রতিটি সেক্টরের সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে মনে করেন নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুল আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘১৯৯৮ সাল থেকে আমি প্রথম আলো পাঠ করি। আমাদের ভালো–মন্দ সব দিক তুলে ধরে প্রথম আলো। প্রথম আলো দেশের কথা বলে, মানুষের কথা বলে। বাচ্চাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ানো, সৃজনশীলতা বাড়াতেও ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে প্রথম আলো।’

আজ শনিবার নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রথম আলোর ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রশ্নোত্তরপর্বে এ কথা বলেন তিনি। এদিন বেলা ১১টায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের মধ্য দিয়ে সুধী সমাবেশ শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসানের স্বাগত বক্তব্যের পর প্রথম আলো চর ও কুষ্টিয়ায় অবস্থিত দেশের প্রথম ছাপাখানা নিয়ে নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের উপস্থাপনায় প্রায় ২০০ পাঠক-সুধী সমাবেশে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বলেন, ‘আমরা যারা পত্রিকায় কাজ করি, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাদের জীবন যাতে আরও মসৃণ হয়, আরেকটু ভালো হয়। আপনাদের চলার পথে যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে, সেগুলা যাতে আমরা তুলে ধরতে পারি। সেগুলো দূর করার জন্য যাতে আমরা সহযোগিতা করতে পারি, সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য। এ জন্য আমরা এসেছি আজকে আপনাদের এখানে। আপনাদের কথা শুনতে।’

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের নীলফামারী জেলার সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ সরকার বলেন, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে প্রথম আলোর ভূমিকা প্রশংসনীয়। নীলফামারীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও প্রথম আলো কাজ করে যাচ্ছে। তিনি চিলাহাটিতে ইমিগ্রেশন চালু ও পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর চালুর বিষয়ে প্রথম আলোতে বেশি বেশি লেখার দাবি জানান।

জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি এস এম শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রথম আলো দেশের কথা বলে, আমাদের কথা বলে।’ প্রথম আলো অসহায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নেওয়ায় ভূমিকা রাখছে। মানুষের হৃদয় জয় করেছে প্রথম আলো। তিনি নীলফামারীর বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে সেগুলো সমাধানে প্রথম আলোকে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানান।

প্রথম আলোর ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে অতিথিরা। শনিবার বিকেলে নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে

সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে। আমরা চাই, বাংলাদেশের জয় হোক। আমরা চাই ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মানুষ এগিয়ে যাক। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা কোথায় কোথায় সমস্যা আছে সেটা বলতে চাই, যাতে সরকার তাকাতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশে যেটা হয়, যখনই আপনি ত্রুটির কথা বলবেন, বিচ্যুতির কথা বলবেন, ধরে নেওয়া হয় সে বিরোধী পক্ষ। কিন্তু আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অবিচল। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে গণতন্ত্র দরকার, সাম্প্রদায়িকতার উচ্ছেদ দরকার। কারণ দেশ সবার।’

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পাঠকদের প্রশ্নোত্তরপর্ব শুরু হয়। পাঠকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন সাজ্জাদ শরিফ। এ সময় প্রথম আলোকে বিভিন্ন পরামর্শ দেন পাঠকেরা।

জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী দৌলতন জাহান বলেন, ‘সত্যের সঙ্গে সুন্দর থাকবে। সত্যের সঙ্গে প্রথম আলো আছে। প্রথম আলো একটা আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আমরা সেই আলোর মিছিলে সমবেত হব।’

নীলফামারী ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। মানুষ সংবাদপত্রের মাধ্যমে সমাজ সম্পর্কে জানতে পারে। প্রথম আলোর সাব-এডিটরিয়াল আমাকে খুব বেশি আকৃষ্ট করে।’

প্রথম আলো বন্ধুসভা নীলফামারীর সহসভাপতি রিফাত আরা সিমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্নোত্তরপর্বে অন্যান্যের মধ্যে কবি আবদুল গাফ্ফার, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কান্তি রায়, জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুধীর রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল ইসলাম, কান্তিভূষণ কুণ্ডু, কবি সেলিনা সাথী প্রমুখ বক্তব্য দেন।