সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা। কারামুক্তির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেরপুর জেলা কারাগারের সামনে
সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা। কারামুক্তির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেরপুর জেলা কারাগারের সামনে

শেরপুরে ‘তথ্য চাইতে গিয়ে’ কারাদণ্ড পাওয়া সাংবাদিক জামিনে মুক্ত

শেরপুরের নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে তথ্য চাইতে গিয়ে অসদাচরণের অভিযোগে ছয় মাসের কারাদণ্ড পাওয়া সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জেবুননাহারের আদালতে শুনানি শেষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই সাংবাদিক কারাগার থেকে মুক্তি পান।

শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম সন্ধ্যায় সাংবাদিক শফিউজ্জামানের মুক্তির বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। শফিউজ্জামান দেশ রূপান্তর পত্রিকার নকলা উপজেলা সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া সাজায় ৫ মার্চ থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

কারামুক্তির পর কারা ফটকে সাংবাদিক শফিউজ্জামান প্রথম আলোর কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তাঁর মুক্তির জন্য শেরপুর, নকলাসহ সারা দেশের সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তাঁকে সাজা দেওয়ার পর তথ্য কমিশন দ্রুত অনুসন্ধানের যে উদ্যোগ নিয়েছে, সে জন্য তথ্য কমিশনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সাংবাদিকের স্বজনেরা জানান, গত মঙ্গলবার শফিউজ্জামান তাঁর ছেলে শাহরিয়ার জাহানকে সঙ্গে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয়-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন। আবেদনটি কার্যালয়ের গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভড কপি (গ্রহণের অনুলিপি) চান। শীলা তাঁকে অপেক্ষা করতে বলেন। শফিউজ্জামান অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে অনুলিপি চান। তখন শীলা বলেন, ‘ইউএনওকে ছাড়া রিসিভড কপি দেওয়া যাবে না।’ পরে শফিউজ্জামান জেলা প্রশাসককে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। এতে ইউএনও আরও ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে নকলা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ইউএনও ও সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে শফিউজ্জামানকে আটক করে। পরে নকলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শফিউজ্জামানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

এ ঘটনার পর সারা দেশের বিভিন্ন সংগঠন নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরও সাংবাদিককে তথ্য না দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় তথ্য কমিশন। গত রোববার সকালে তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম (ঝিনুক) শেরপুরে গিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। সোমবার দুপুরে কার্যক্রম শেষ করে তিনি ঢাকায় ফিরে যান।