আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি রংপুরে আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। তবে শহরের পরিস্থিতি ছিল থমথমে।
শহরের প্রধান সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনী, বিজিবির সদস্যদের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিকে শহরের অফিস পাড়ায় পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, শিক্ষা কার্যালয়, রাজস্ব অফিস, টেলিফোন ভবন, প্রধান ডাকঘরের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক নিরাপত্তা ছিল। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিজিবির সদস্যদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
সকাল ১০টা থেকে শহরের বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় থেকে জিলা স্কুল মোড় হয়ে পুলিশ লাইনস পর্যন্ত প্রধান সড়কজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তার জন্য এই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দুই পাশের দোকানপাট, বিপণিবিতান খোলা থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল না।
বাংলাদেশ মোড় থেকে বিকল্প পথে রাধাবল্লভ হয়ে চিড়িয়াখানার সামনে দিয়ে মানুষজন চলাচল করেছে। একই সঙ্গে শহরের বেতপট্টি মোড় হয়ে গোমস্তাপাড়ার ভেতর দিয়ে কেরামতিয়া মসজিদের পাশ দিয়ে বিকল্প পথে লোকজনকে ঘুরে যেতে হয়েছে। ফলে মানুষদের চলাচলে ভোগান্তি পেতে হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলে ভোগান্তি।
রিকশায় করে রংপুর ধাপ এলাকা থেকে শহরের শালবনে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন একজন নারী। তাঁর কাছে দুর্ভোগ প্রসঙ্গে কিছু একটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখতেই তো পারছেন, কী একটা অবস্থা হয়েছে। এখানে কোনো কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।’
শহরের জিলা স্কুল মোড়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির ঘোষণা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে। ফলে তাদের কর্মসূচি হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনরত একজন শিক্ষার্থী বলেন, কর্মসূচি থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি।
মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয় এ জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। তবে কর্মসূচি পালন হয়নি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।