চট্টগ্রাম নগরের সিডিএ এভিনিউ সড়কের লালখান বাজার এলাকায় গত সোমবার অবরোধ করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রাম নগরের সিডিএ এভিনিউ সড়কের লালখান বাজার এলাকায় গত সোমবার অবরোধ করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা

‘ছেলের লাশ পাবেন’—হুমকির ঘটনায় দুই থানায় জিডি

কোটাবিরোধী আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদের বাবাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দুই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানায় হুমকির বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন তালাতের বাবা মো. তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে গত সোমবার রাতে হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তালাত নিজেই।

সাধারণ ডায়েরিতে মো. তরিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদের নাম উল্লেখ করেছেন। এতে তিনি বলেন, গত রোববার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে এক ব্যক্তি তাঁর মুঠোফোনে কল করেন। ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেছেন, ‘আপনার ছেলে কোটা আন্দোলন করছে, আন্দোলন থেকে সরে না এলে আপনার ছেলেকে জীবিত অবস্থায় পাবেন না, হয়তো আপনার ছেলের লাশটি পেতে পারেন।’

তরিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে পেরেছেন। তাঁর নাম হৃদয় আহমেদ। থাকেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে। স্থায়ী ঠিকানা নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায়।’

সাধারণ ডায়েরির বিষয়ে জানতে চাইলে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি তিনি আদালতকে অবহিত করবেন। পরে আদালত অনুমতি দিলে তাঁরা তদন্ত করবেন।

অন্যদিকে তালাত মাহমুদের করা সাধারণ ডায়েরিতে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। এতে আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তি তাঁর ক্ষতিসাধন করতে পারে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হৃদয় আহমেদ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তালাতের বাবাকে ফোন দিয়েছিলেন। তবে কোনো হুমকি দেননি। তালাত নিজেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাই তিনি তাঁর বাবাকে তালাতকে বিষয়টি বোঝানোর জন্য বলেছিলেন।

হৃদয় আহমেদ বলেন, তিনি ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিএফসির রাজনীতিতে যুক্ত। তিনি শাহ আমানত হলে থাকেন। প্রক্টরকে দেওয়া আজকের অভিযোগপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপক্রীড়া সম্পাদক শফিউল ইসলাম তাঁর পক্ষ হয়ে দিয়েছেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা হৃদয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেননি। তবে শফিউল নামের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর হৃদয়ের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যেহেতু জিডি করা হয়েছে, তাই পুলিশকে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।  

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবারও একই দাবিতে গণসংযোগ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খান তালাত মাহমুদ শুরু থেকেই এ আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।