নীলফামারীতে কর্মশালা

বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে যক্ষ্মা রোগীর

নীলফামারীতে গতকাল যক্ষ্মা সচেতনতাবিষয়ক প্রচারণা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়। শহরের জোড়দরগা এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

‘এসো বন্ধু সকলে মিলে, কাজ করি যক্ষ্মা নির্মূলে’ স্লোগান নিয়ে নীলফামারীতে গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী যক্ষ্মা সচেতনতাবিষয়ক প্রচারণা কর্মশালা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের জোরদড়গা এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ওই কর্মশালা শুরু হয়।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। সরকার ইতিমধ্যে বিনা মূল্যে যক্ষ্মার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছে। এ রোগ নির্মূলে প্রয়োজন অধিকতর জনসচেতনতা।

যক্ষ্মা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইউএসএআইডির পৃষ্ঠপোষকতায় আইসিডিডিআরবির পরিচালনায় এ কর্মসূচির আয়োজন করে প্রথম আলো বন্ধুসভা।

এই প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী বিভাগের আটটি এবং রংপুর বিভাগের চারটি জেলায় প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। জেলাগুলো হচ্ছে রাজশাহী, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম।

এর আগে গত জুনে ঢাকায় তিন দিনব্যাপী কর্মশালার মধ্য দিয়ে সচেতনতা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু হয়।

বন্ধুসভার ২৬ জন সদস্য কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা সার্ভিল্যান্স চিকিৎসা কর্মকর্তা মেরাজুল ইসলাম, ইউএসএআইডির রংপুর বিভাগীয় প্রকল্প কর্মকর্তা চিশতিয়া আলম, জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হাসান চৌধুরী, নীলফামারী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নূরুল করিম, প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান, বেসরকার উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএসের নির্বাহী পরিচালক ভুবন রায়, শিক্ষক সুধীর রায় প্রমুখ।

উদ্বোধন পর্বে বক্তারা বলেন, যক্ষ্মা একটি পুরোনো জীবাণুঘটিত সংক্রামক ব্যাধি। পৃথিবীর এক–তৃতীয়াংশ মানুষ যক্ষ্মার ঝুঁকিতে আছেন। ২০২১ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। এর মধ্যে ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৬১ জন শনাক্ত হলেও এর বাইরে আছেন ৬৭ হাজার ৪৩৯ জন। শনাক্ত না হওয়া এসব রোগী চিকিৎসার আওতায় না আসায় যক্ষ্মার সংক্রমণ বাড়ছে। এটি বায়ুবাহিত রোগ, রোগটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। এই রোগে প্রধানত ফুসফুস আক্রান্ত হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। সরকার ইতিমধ্যে বিনা মূল্যে যক্ষ্মার চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে। তবে এ রোগ নির্মূলে প্রয়োজন অধিকতর জনসচেতনতা। এজন্য সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বন্ধুসভার সভাপতি নিপুণ রায় ও সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ ফয়সাল সিদ্দিক। কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়।