খেলা শুরু হয় বিকেল চারটায়। কিন্তু দুপুরের আগে থেকেই লোকজন স্টেডিয়ামে ভিড় করেন। খেলা যখন শুরু হয়, তখন কানায় কানায় পূর্ণ ছিল ১৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি। জায়গা না পেয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেকে।
এ চিত্র শনিবার বিকেলে জামালপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুল হাকিম স্টেডিয়ামের। সেখানে হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি ও জামালপুর পৌরসভা ফুটবল একাদশের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হয়েছে। ৯০ মিনিটের এ খেলা ১-১ গোলে ড্র হয়।
খেলাটির আয়োজন করে জামালপুর পৌরসভা। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, জামালপুরের মানুষ ফুটবল খেলা ভালোবাসেন। একসময় জামালপুর জেলার খেলোয়াড়েরা জাতীয় পর্যায় খেলতেন। জামালপুরে বিভিন্ন সময় ফুটবল লিগ ও প্রীতি ম্যাচও অনুষ্ঠিত হতো। সেই সময় জামালপুরে অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড় এসেছেন খেলতে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই দিন আর নেই। স্টেডিয়ামটি গোচারণভূমিতে রূপ নেয়।
২০২০ সালে পুরো স্টেডিয়াম ভেঙে নতুন করে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। এখন সেখানে খেলাধুলা হচ্ছে। ফুটবলপ্রেমীদের চাঙা করতে জামালপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা শনিবার বিকেলে জামালপুর পৌরসভা ফুটবল একাদশের সঙ্গে খেলতে আসে। খেলার খবরের প্রচারণা মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই হয়। আর তাতেই বিকেলে ১৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি কানায় কানায় ভরে যায়।
খেলা দেখতে এসেছিলেন জামালপুর শহরের মুকুন্দবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি দুই দলের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। একটা প্রতিযোগিতামূলক খেলা হয়েছে। খেলা টান টান উত্তেজনায় ভরা ছিল। এই খেলায় বিপুলসংখ্যক দর্শক দেখে অভিভূত হয়েছি। আমাদের সময়েও অনেক দর্শক হতো। কিন্তু জামালপুরের কোনো মাঠে এত দর্শক এর আগে দেখেছি বলে মনে হয় না। ফুটবল যে কত জনপ্রিয় খেলা, আজ আবার তা স্মরণ করিয়ে দিল। এ ধরনের ফুটবল ম্যাচ প্রায়ই হওয়া উচিত। তাহলে ফুটবলপ্রেমীরা আনন্দ পাবেন।’
হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন। তিনি নিজেও মাঠে ছিলেন। তাঁর দলের পক্ষে তিনিই গোলটি করেন।সৈয়দ সায়েদুল হক খেলা শুরু আগে দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজকের দর্শক উপস্থিতি প্রমাণ করে, জামালপুরের মানুষ যে ফুটবলকে ভালোবাসেন। জামালপুরের মানুষ অতিথিপরায়ণ। আমার খুব ভালো লাগছে, এই খেলা দেখতে এত মানুষ আসছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে অনুরোধ, এ ধরনের খেলা আরও আয়োজন করবেন। ফুটবলের জন্য কাজ করব।’
খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ। খেলা শেষে দুই দলকে ট্রফি দেওয়া হয়।