ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর–মারধরের পর খাবার হোটেল বন্ধ করে দিল ছাত্রলীগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের একটি খাবার হোটেল ভাঙচুর ও এর মালিককে মারধরের পর হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের কাছে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।

এতে ছাত্রলীগের কর্মী তুষার, বিশাল, পিয়াসসহ ছাত্রলীগের কয়েকজনের কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তুষার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনিসহ অন্যরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী ওরফে আরাফাতের অনুসারী বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

লিখিত অভিযোগে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ আরও কয়েকটি দপ্তরে দেওয়া হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আশরাফুল ইসলাম ওরফে পিন্টুর মালিকানাধীন পিন্টু হোটেলে ভাত খেতে যান তুষার ও তাঁর লোকজন। এ সময় ভাত শেষ হয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সামনেই আশরাফুল ইসলামকে বেধড়ক মারধর এবং হোটেলের চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে হোটেলটিতে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা।

আশরাফুল ইসলাম ওরফে পিন্টু গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামান্য বিষয় নিয়ে বড় চামচ দিয়ে আমাদের পেটানো হয়েছে। হোটেলে ভাঙচুর করে একপর্যায়ে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে হোটেল খোলার চেষ্টা করা হয়। এ সময় তুষারসহ তাঁর দলবল আবারও হোটেলে যান এবং তিন মিনিটের মধ্যে দোকান বন্ধ করে দিতে বলেন। হোটেলের কর্মচারীরা ভয়ে দোকানটি বন্ধ করে দেন।’

উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী বলেন, সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আন নূন যায়েদ প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টা মীমাংসা হয়ে গেছে।

দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের পরিষদের শান্তিডাঙ্গা ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা ভাঙচুর ও মালিককে মারধরের পর খাবার হোটেলটি বন্ধ করে দেয়। এটা অন্যায়। এরপরও আজ সকালে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। এরপর দুপুরে আবারও হুমকি দেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। একের পর এক এমন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। তাঁরা আশ্বাস দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’