আমির হোসেন আমুর বাসভবন থেকে প্রায় প্রায় চার কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ
আমির হোসেন আমুর বাসভবন থেকে প্রায় প্রায় চার কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ

ঝালকাঠিতে আমুর জ্বালিয়ে দেওয়া বাড়ি থেকে ব্যাগভর্তি ৪ কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার

ঝালকাঠিতে সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত বাসভবন থেকে প্রায় চার কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের রোনালস রোডের আমুর বাসভবন থেকে লাগেজভর্তি টাকাগুলো উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক।

স্থানীয় লোকজন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা সোমবার দুপুরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর বিকেলে বিক্ষুব্ধ জনতা আমির হোসেন আমুর ঝালকাঠির বাসভবনে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। পরবর্তী সময়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক দফা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত ১২টার দিকে স্থানীয়রা ওই ভবনের তৃতীয় তলায় আবার আগুন দেখতে পান।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে এসে আগুন নেভানোর সময় পানি নিক্ষেপ করলে কয়েকটি পোড়া লাগেজ থেকে টাকার বান্ডেল বেরিয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা এসে ওই টাকার লাগেজগুলো উদ্ধার করেন। এর মধ্যে থেকে তাঁরা গণনা করে একটি লাগেজে অক্ষত এক কোটি এবং অপর লাগেজগুলো থেকে গণনা করে আংশিক পোড়া দুই কোটি ৭৭ লাখ টাকা উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া ডলার, ইউরোসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যমানের মুদ্রা হবে বলেও জানায় পুলিশ।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনটির তৃতীয় তলার কক্ষে অনেকগুলো কম্বলের লাগা আগুন নেভানোর সময় কিছু টাকার বান্ডেল বেরিয়ে আসে। এর সঙ্গে কয়েকটি লাগেজও পাওয়া যায়। এরপর বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাই। এরপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে টাকাগুলো উদ্ধার করে।’

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক বলেন, উদ্ধার করা টাকা সদর থানায় জমা দিয়েছে সেনাবাহিনী। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতা গতকাল সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মীর বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় কুমারপট্টিসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে মালামাল লুট করতে দেখা যায়। শহরের কলেজ সড়কের উপজেলা চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহামুদ, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল শরীফসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বসতবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিজয় মিছিলের জন্য বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিলসহকারে শহরে প্রবেশ করছেন। অনেকে বাস–ট্রাকযোগে মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করছেন। এ ছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও শহরে বিজয় মিছিল করছেন।