প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যৌন হয়রানির দায়ে চাকরিচ্যুত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক

অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া এক কিশোরীকে যৌন হয়রানির দায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের উপপ্রধান চিকিৎসক রাজু আহমেদকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক রাজু আহমেদকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত হয়েছে।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর রাতে রাজশাহী নগরের একটি ক্লিনিকে এক কিশোরীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পরের দিন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ভুক্তভোগী কিশোরীর মা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ অক্টোবর রাতে রাজশাহী নগরের একটি ক্লিনিকে এক কিশোরীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পরের দিন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ভুক্তভোগী কিশোরীর মা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ নভেম্বর রাজু আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ঘটনার ১৪ দিন পর ১৩ নভেম্বর ওই মামলার বাদী ও ওই কিশোরীর মাসহ তিনজনের নামে রাজশাহীর আদালতে পাল্টা মামলা করেন রাজু। রাজুর নামে মামলা হওয়ার পর তিনি হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার শর্তে জামিন নেন। বাদীপক্ষ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ রাজুর জামিন বাতিলের আবেদন করে। পরে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রাজুর জামিন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ সেল এবং সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধবিষয়ক অভিযোগ কমিটিকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের প্রতিবেদনে চিকিৎসক রাজু আহমেদ দোষী সাব্যস্ত হন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক রাজু আহমেদ, ওই কিশোরী, তাঁর মাসহ মোট ২২ ব্যক্তির সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধবিষয়ক অভিযোগ কমিটিকের প্রতিবেদনে চিকিৎসক রাজু আহমেদ দোষী সাব্যস্ত হন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২৬তম সিন্ডিকেট সভায় চিকিৎসক রাজু আহমেদকে চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে তাঁর (রাজু) আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তাঁকে কেন চাকরিচ্যুত করা হবে না, এ মর্মে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি ৫২৯তম সিন্ডিকেট সভায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই প্রতিবেদনের সার্বিক দিক পর্যালোচনা শেষে গতকাল স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় সিন্ডিকেট।