‘কৃষক দলের কর্মী সজিব হত্যার ঘটনায় পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে মামলা হবে’

কৃষক দলের কর্মী সজিব হোসেনকে হত্যার ঘটনায় লক্ষ্মীপুরে প্রতিবাদ সভা করেছে জেলা বিএনপি। আজ বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর লক্ষ্মীপুর শহরের বাসভবন প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী কৃষক দলের কর্মী সজিব হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় বলছেন, ‘পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফের বিরুদ্ধে সজিব হত্যার ঘটনায় মামলা হবে। তিনি আওয়ামী পরিবারের লোক। শুনেছি, তাঁর ভালো পোস্টিং হয়নি। এখন ভালো পোস্টিংয়ের জন্য আমাদের ওপর গুলি চালিয়ে ও মামলা করে আওয়ামী কর্মী সেজেছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই এসপিকে প্রত্যাহার করতে হবে। তাঁর বিচার হবে। তাঁর সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তারও বিচার হবে।’

জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর লক্ষ্মীপুর শহরের বাসভবন প্রাঙ্গণে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এ সভা করা হয়েছে। বিকেল চারটার দিকে কর্মসূচি শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীরা সজিব হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্যসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, সদর বিএনপির আহ্বায়ক মাঈনুদ্দিন চৌধুরী, সদস্য নিজামুদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও খুন করছে। ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য সজিবকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করে তারা। সজিবের খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ অতর্কিতভাবে হামলা করেছে। হয়রানি করার জন্য উল্টো বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর শহরে পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় চারটি মামলা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, দুটি মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে প্রধান করে ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ দুই মামলায় ৩ হাজার ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর থানা-পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেছে। মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর, মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।

কৃষক দলের কর্মী সজিব হোসেন হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই সুজন হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের আসামি করে একটি মামলা করেছেন। অপর মামলার বাদী নুরুল আমিন। তাঁর বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন।

গত মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের গোডাউন রোড এলাকার শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর বাসভবন থেকে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। সাড়ে চারটার দিকে রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের কাছে পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দেয়। পাঁচটার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল ও রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও বিএনপির। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ। এতে কৃষক দলের কর্মী সজিব নিহত এবং পুলিশ ও বিএনপির অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।