কারফিউ শিথিল করতেই প্রায় সব ধরনের গাড়ি চলাচল শুরু করেছে। ফলে কোনো কোনো সড়কে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। চট্টগ্রাম নগরের স্টেশন সড়ক, দুপুর ১২টা
কারফিউ শিথিল করতেই প্রায় সব ধরনের গাড়ি চলাচল শুরু করেছে। ফলে কোনো কোনো সড়কে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। চট্টগ্রাম নগরের স্টেশন সড়ক, দুপুর ১২টা

পরিস্থিতি স্বাভাবিক, রাস্তায় যানজট

সকাল থেকে কারফিউ শিথিল করতেই বন্দরনগর চট্টগ্রাম নগরে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। কোথাও কোথাও যানজটও সৃষ্টি হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরে সড়কগুলোয় গণপরিবহন, পণ্যবাহী যানবাহনসহ প্রায় সব ধরনের গাড়ি চলাচল শুরু করেছে। বিশেষ করে বেলা তিনটায় অফিস-আদালত ছুটির পর রাস্তাঘাটে গাড়ির জট তৈরি হয়েছে।

তিন দিন পর আজ অফিস-আদালত খুলে। বেলা ১১টা থেকে অফিস-আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। আর চট্টগ্রামে সকাল ৯টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়। শিথিল থাকবে ৬টা পর্যন্ত। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার মধ্যরাতে কারফিউ জারি করা হয়। আর রোববার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নির্বাহী আদেশে সাধারণ ছুটি ছিল।

আজ সকালে সাড়ে ১০টায় নগরের ২ নম্বর গেট মোড়ে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ রুবেলের সঙ্গে। তাঁর অফিস নগরের আগ্রাবাদ এলাকায়। অপেক্ষা করছিলেন বাসের জন্য। তিনি বলেন, তিন দিন পর অফিস খুলছে। যাবেন কি, যাবেন না, এ নিয়ে দোটানায় ছিলেন। কেননা গত কয়েক দিনের পরিস্থিতিতে মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। তবে পরে খোঁজখবর নিয়ে দেখেছেন সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

মোহাম্মদ রুবেলের সঙ্গে বাসের জন্য অপেক্ষারত ছিলেন আরও অন্তত ১০ জন। সবার গন্তব্য নিজের নিজের কর্মস্থল। কারও গন্তব্য নগরের লালখান বাজার, কারও দেওয়ানহাট, কারও আগ্রাবাদ। তাঁদের একজন সোলায়মান আহমেদ। তিনি দেওয়ানহাটে একটি অফিসে চাকরি করেন। তিনি বলেন, শুরুতে মনে হয়েছিল রাস্তাঘাটে গাড়ির পরিমাণ কম থাকবে। কিন্তু অনেক গাড়ি। স্বাভাবিক সময়ের মতোই গাড়ি চলছে।

নগরের নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাতের অনেক দোকান খুলেছে । দুপুর সাড়ে ১২টা, চট্টগ্রাম

নগরের আগ্রাবাদ মোড় এলাকায় দুপুর ১২টায় গিয়ে দেখা যায়, গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের। হাতের ইশারায় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছিল তাঁদের। সড়কে এই সময় যানজট সৃষ্টি হয়। এতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

বাসের যাত্রী আরাফাত হোসেন বলেন, নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ব্যাংকে একটা কাজ আছে। এত দিন সাধারণ ছুটি থাকায় সব কাজ থমকে গিয়েছিল। অফিস খুলতেই তাই ঘর থেকে বের হয়েছেন। প্রথমেই ব্যাংকের কাজ সারবেন।

নগরের টাইগারপাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয় এবং সিআরবিতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তরে গিয়ে দেখা যায়, অফিস খোলার প্রথম দিনেই প্রায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে এসেছেন। দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন। চলে সভা-বৈঠকও।

রেলওয়ের জনসংযোগ দপ্তরে কর্মরত মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে এসে অফিস করেন। তাই প্রথম দিন তাড়াতাড়ি বের হয়েছেন। অফিসেও এসেছেন তাড়াতাড়ি।

আজ বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত নগরের কাজীর দেউড়ী মোড়, মেহেদীবাগ ও প্রবর্তক মোড় ঘুরে দেখা গেছে, এ সময় অফিস-আদালত ছুটি হয়। ছুটি শেষে কর্মস্থল থেকে বের হতে শুরু করেন চাকরিজীবীরা। এতে এসব এলাকার সড়কে গাড়ির যানজট ছিল। অনেকেই গাড়ি না পেয়ে হেঁটে গন্তব্য রওনা দেন।

নগরের প্রবর্তক মোড় এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন দিদারুল আলম। তিনি বলেন, তাঁর বাসা নগরের কাজীর দেউড়ীতে। অফিস ছুটি শেষে রাস্তাঘাটে যানজট। গাড়িতেও যাত্রীদের ভিড়। আসন না পেয়ে পরে হেঁটে রওনা দিয়েছেন।