সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘বাপেরও বাপ আছে’ লিখে স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তায়েফ মোহাম্মদ নিয়াজুল ইসলামের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে হামলার পর আজ শনিবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম শাহাব উদ্দিন (৩৮)। তিনি উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা তায়েফের বাড়ি একই ইউনিয়নের কাদিরপুর গ্রামে। গতকাল রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে স্থানীয় পেকুরবাজার এলাকায় যাওয়ার পথে তাঁর ওপর হামলা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত আটটার দিকে নিজের ফেসবুকে ‘বাপেরও বাপ আছে’ লিখে একটি স্ট্যাটাস দেন ছাত্রলীগ নেতা তায়েফ। এক ঘণ্টা পর মোটরসাইকেলে করে স্থানীয় পেকুরবাজার এলাকায় যাওয়ার সময় একদল লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা করে। এতে তাঁর মাথায় ধারালো দায়ের কোপ লাগে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য নিয়ে যান। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই লেগেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শাহাব উদ্দিন নামের এক যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় আজ সকাল ১০টার দিকে তায়েফ বাদী হয়ে কাদিরপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আবদুল হান্নান (৩৮), কৌলারশি গ্রামের কামরুল ইসলাম (৩৮), ইশতিয়াক আহমদ (৫৫), হেমেদ আনাফ (২২), তারেক আহমদ (৩৯), শাহাব উদ্দিন (৩৮) ও রায়হান আহমদের (২৪) নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিকসহ অন্যান্য পূর্ববিরোধের জের ধরে তাঁর ওপর এ হামলা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আটক শাহাব উদ্দিনকে ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তায়েফ মোহাম্মদ নিয়াজুল ইসলাম বলেন, তিনি একসময় মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সফি আহমদের অনুসারী ছিলেন। নির্বাচনের পর নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। গত রোজার মাসে সফির সঙ্গে থাকবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর জেরে তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে। সফি আহমদকে উদ্দেশ করে তিনি ‘বাপেরও বাপ আছে’ লিখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বলে তিনি জানান।
তবে এ কে এস সফি আহমদ তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তায়েফ মাদকাসক্ত। তাঁর নৈতিক স্খলন ঘটেছে। তাঁর অভিভাবকদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। মাদকের লেনদেন নিয়ে তাঁর ওপর হামলা ঘটেছে। আমার সঙ্গে কে থাকবে বা না থাকবে, সেটা তাঁদের নিজস্ব বিষয়।’