হুইপের সমর্থকদের ওপর হামলাকে ‘কর্মফল’ বললেন নৌকার প্রার্থী

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে
প্রথম আলো

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর কর্মী ও সমর্থকদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা ওই প্রার্থীর কর্মের ফল বলে মন্তব্য করেছেন নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।

আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থী বলেন, পটিয়ায় জনগণের বিশাল অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর ক্ষুব্ধ। এবার দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় ভোট চাইতে গিয়ে সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়ছেন। ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। মূলত কর্মী ও সমর্থকদের ওপর যা হচ্ছে, তা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মের ফল।

চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন, এমন অভিযোগ এনে মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হুইপের পূর্ণ সুবিধা ও প্রটোকল নিয়ে সামশুল হক চৌধুরী এলাকায় ভীতি সৃষ্টি করে চলেছেন। তাঁর পুত্র লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুড়ছেন। এতে ভোটাররা আতঙ্কিত হচ্ছেন।

মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য ও হুইপ হওয়ার সুবাদে সামশুল হক চৌধুরী এলাকায় প্রশাসনকে তাঁর মতো সাজিয়ে রাখেন। আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা দুরভিসন্ধিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। এসব নিয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’

হুইপের ওপর সর্বশেষ গতকাল শনিবার হামলার ঘটনাকে সাজানো বলে দাবি করেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক সম্প্রসারণের সময় শান্তিরহাটের ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন এলাকাবাসী। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়ির বহর আটকে রাখা হয়েছিল। এখানে গাড়ি ভাঙচুর বা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। নিজেরাই নিজেদের গাড়ি ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগ ও নৌকার সমর্থকদের মামলায় জড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বোনের ওপর আক্রমণের ঘটনাটিও সাজানো। উল্টো গতকাল নৌকার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ছয়জনকে আহত করা হয়েছে।  

নৌকার প্রার্থীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সামশুল হক চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোনো প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। দুদক বিভিন্ন সময়ে তদন্ত করে কোনো অনিয়ম পায়নি। বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর হামলা করছেন নৌকার সমর্থকেরা।

পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে চট্টগ্রাম-১২ আসন। ভোটার ৩ লাখ ২৯ হাজার ৪২৮ জন। এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ৯ জন। তবে ভোটাররা মনে করছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও তিনবারের সংসদ সদস্য ও হুইপ স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর মধ্যে। অবশ্য প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এই আসনে সংঘাত থামছেই না। স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ, এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ বার হামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার তাঁর ছোট ভাই ও বোনকে মারধর করা হয়েছে।