মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর চা-বাগানের ভেতরে থাকা মাধবপুর লেক পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনরত চা-শ্রমিকেরা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চা-বাগান ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) শ্রমিকেরা আজ বুধবার সকাল থেকে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজনকে ঢুকতে দিচ্ছেন না।
গত ২০ অক্টোবর থেকে বকেয়া মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন এনটিসির ফাঁড়ি বাগানসহ ১৬টি চা-বাগানের শ্রমিকেরা। আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, তাঁদের প্রাপ্য মজুরি না পেলে কাজে যোগ দেবেন না।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক নাইম হোসেন বলেন, ‘মাধবপুর লেকের কথা অনেক শুনেছি। আজ পরিবার নিয়ে ঘুরে দেখার জন্য এলাম। এখন দেখি, লেকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক অনুরোধ করেও ভেতরে যেতে পারলাম না। তাই মাধবপুর লেকের সামনে থেকে ঘুরে যাচ্ছি।’
মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিক লক্ষ্মণ বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকেরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কারও ঘরেই খাবার নেই। আমরা আর কত দিন এভাবে চলব? আমাদের তো টাকাপয়সা জমা নেই। ঘরে ছেলেমেয়েরা না খেয়ে বসে থাকে। কী যে একটা কঠিন সময়ের ভেতরে যাচ্ছি বলা মুশকিল। এখানে লেকে পর্যটক ঢুকলে টিকিট কাটতে হয়। সেই টিকিটের টাকাও মালিক পক্ষ পান। তাঁরা এগুলো নিয়ে যান। আর আমরা না খেয়ে মরি। এ জন্য আজ থেকে আমরা সব বন্ধ করে দিয়েছি। সকাল থেকে অনেকেই এসেছেন। আমরা কাউকেই ঢুকতে দিইনি।’
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউড়ি প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা তিন মাস ধরে মজুরি পাচ্ছেন না। খেয়ে না–খেয়ে জীবনযাপন করছেন। আজ থেকে মাধবপুর চা-বাগানের শ্রমিকেরা পর্যটকদের লেকে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা শ্রমিকেরা যেহেতু কর্মবিরতিতে আছি, লেকের সিকিউরিটি (নিরাপত্তা) কে দেবে? এর চেয়ে বন্ধ থাকা ভালো। তা ছাড়া লেকের টিকিটের টাকাও মালিক পক্ষ নিয়ে যাচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি, মাধবপুর লেক পর্যটকদের জন্য শ্রমিকেরা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’