কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় বাড়ির সীমানার গাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘর থেকে বের করে দুই ভাই-বোনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের চাচার বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের উত্তর কুড়িমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একই পরিবারের আরও তিনজন আহত হন।
নিহত দুজন হলেন উত্তর কুড়িমারা গ্রামের শামছুল হকের ছেলে মাহমুদুল ইসলাম (২৭) ও তাঁর ছোট বোন নাদিরা আক্তার (২১)। মাহমুদুল পড়াশোনা করে সিলেট শহরে বাবার কাপড়ের ব্যবসা দেখতেন। পারিবারিক কাজে গতকাল বুধবার রাতে তিনি বাড়িতে আসেন। নাদিরা স্নাতক প্রথম বর্ষে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে পড়াশোনা করতেন।
নিহতদের পরিবারের লোকজনের বরাত দিয়ে থানা-পুলিশ জানায়, আবদুল কাদিরের সঙ্গে তাঁর ভাই শামছুল হকের বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। শামছুল গতকাল বাড়ির সীমানার গাছ কেটে ফেলেন। এর জের ধরে আজ সকালে শামছুলের ছেলে মাহমুদুল ইসলামকে ঘর থেকে বের করে এনে তাঁর চাচা কাদির এবং তাঁর দুই ছেলে আরমান, ইমরানসহ কয়েকজন কুড়াল দিয়ে কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। মাহমুদুলকে বাঁচাতে তাঁর মা, ভাই ও বোন এগিয়ে গেলে তাঁদেরও কুপিয়ে এবং পিটিয়ে জখম করা হয়। এ সময় শামছুল হক বাড়িতে ছিলেন না।
স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর আহত অবস্থায় নাদিরা আক্তার, মা আছমা খাতুন, ভাই হুমায়ুন কবীর ও মো. সালমানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাদিরার মৃত্যু হয়।
নিহত দুজনের বাবা শামছুল হক বলেন, ‘আমার ভাই আবদুল কাদির ও তাঁর দুই ছেলে আরমান ও ইমরান মিলে আমার দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। পরিকল্পিতভাবে আমার সাজানো সংসার ধ্বংস করে দিয়েছে।’
হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে আবদুল কাদির ও তাঁর দুই ছেলে পলাতক। তাঁদের আটক করা যায়নি।
হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার পর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।