সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই নগরে ওয়ার্ড আছে ৪২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি। আগামী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের সঙ্গে।
প্রথম আলো: পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আপনি রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ এ নগরে ভোট গ্রহণ চ্যালেঞ্জ মনে করছেন কি?
ফয়সল কাদের: সিলেট সিটি করপোরেশন গুরুত্বপূর্ণ একটা নগর। তবে ভোট আয়োজনের বিষয়টিকে আমরা কোনো চ্যালেঞ্জ মনে করছি না। ভোট আয়োজন আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে দায়িত্বটুকু ভালোভাবে পালন করতে আমরা সচেষ্ট থাকব। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন আয়োজনই আমাদের মূল লক্ষ্য।
প্রথম আলো: নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কিংবা অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি কেমন?
ফয়সল কাদের: সিলেট একটা শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতির অঞ্চল হিসেবেই সুপরিচিত। আমরা মনে করছি, এখানে নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি আমাদের হতে হবে না। এরপরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হবে। প্রার্থী, ভোটার ও নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভালো একটা নির্বাচন আমরা উপহার দিতে চাই।
প্রথম আলো: এরই মধ্যেই তো মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ শুরু হয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
ফয়সল কাদের: ভালোই সাড়া মেলছে। তবে এখনো সময় আছে। শেষ দিকে হয়তো আরও সাড়া পাব। রোববার পর্যন্ত মেয়র পদে চারজন, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২০৮ জন এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৫৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে তাঁদের কেউই এখন পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম জমা দেননি।
প্রথম আলো: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে। সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ইভিএমে ‘ভোট ছিনতাইয়ের’ আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য দিচ্ছেন। অভিযোগের বিষয়ে যদি কিছু বলতেন...
ফয়সল কাদের: এ বিষয়ে আমি শুধু এটিই বলব, ইভিএমে ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের ভূমিকাই আমরা রাখব। এখানে আশঙ্কার কিছু নেই। সুন্দর ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন করতেই আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে।
প্রথম আলো: তফসিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কমিশন (ইসি) এক নির্দেশনায় নগর থেকে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, তোরণসহ সব ধরনের প্রচারসামগ্রী অপসারণ করতে বলেছে। বাস্তবে কোনো প্রার্থীই তা অপসারণ করেননি। এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেবেন?
ফয়সল কাদের: আমাদের অভিযান চলমান। দ্রুত এগুলো অপসারণ করা হবে।
প্রথম আলো: নির্বাচনী আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছেন কি? প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার আগেই এখন অনেক প্রার্থী নানা কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সংসদ সদস্যরাও প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে।
ফয়সল কাদের: আমরা মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের আচরণবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সবাইকে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া মাননীয় সংসদ সদস্যদের প্রচারণা চালানোর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।