নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই এমন অভিযোগ করে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাব্বীর আহমদ। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন ‘ফুলতলী হুজুর’ নামে পরিচিত আবদুল লতিফ চৌধুরীর ছেলে মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী। শাব্বীর আহমদ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়কের পদে রয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে শাব্বীর আহমদ বলেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন জাতীয় পার্টিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনী মাঠে সে রকম কোনো পরিবেশ পাচ্ছেন না। তাই নির্বাচন করা খুব কঠিন।
শাব্বীর আহমদ আরও বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিলেট সার্কিট হাউসে সব প্রার্থীর সঙ্গে বৈঠক করে আবারও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন। সে সময় আমরা (কয়েকজন প্রার্থী) নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি এবং নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর চাপ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এমন অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে আরও ব্যাপকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
শাব্বীর অভিযোগ করে বলেন, অন্য প্রার্থীরাও নির্বাচনী মাঠে থাকতে পারছেন না, তাঁদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সংস্থা থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো পরিবেশ না থাকায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে শাব্বীর আহমদ বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তিনি দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি নির্বাচনী পরিবেশ না থাকলে ‘বয়কট করার’ কথা বলেছেন।
সিলেট-৫ আসনটিতে বর্তমানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী (কেটলি প্রতীক), যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আহমদ আল কবির (ট্রাক), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. বদরুল আলম (ডাব), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম (হারিকেন)।
স্থানীয় লোকজন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রয়াত বাবা আবদুল লতিফ চৌধুরী সারা দেশে ‘ফুলতলী হুজুর’ নামে পরিচিত। আবদুল লতিফের তৈরি করা সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহের অসংখ্য ভক্ত ও মুরিদ আছেন। ফুলতলীর অনুসারীদের সিলেট-৫ আসনে একটা ‘ভোটব্যাংক’ আছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর গত ৫ ডিসেম্বর হুছামুদ্দীন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।