চট্টগ্রাম–১১ (বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের সম্পত্তি বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। ২০১৮ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৭২ লাখ টাকায়। ৫ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। পরিমাণে কম হলেও স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে এই সংসদ সদস্যর।
১৫ বছর আগে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় এম এ লতিফের বার্ষিক আয় ছিল ৬ লাখ ১৮ হাজার টাকার। আর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩০ লাখ টাকার। টানা তিনবার জয়লাভ করা এই সংসদ সদস্যর সম্পত্তি ও আয় বেড়েছে। তবে গতবারের তুলনায় তাঁর বার্ষিক আয় কমেছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম–১১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এম এ লতিফ। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ তে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তিনবার জয়ী হয়েছেন তিনি।
সংসদ সদস্য এম এ লতিফের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এম এ লতিফের এখন বার্ষিক আয় ৭৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা। যদিও পাঁচ বছর আগে তাঁর আয় ছিল ৮২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আয় কমেছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
পেশায় ব্যবসায়ী এম এ লতিফের আগে কৃষি খাতে কোনো বিনিয়োগ বা আয় ছিল না। এখন এই খাত থেকে তাঁর আয় আসছে, যার পরিমাণ ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৭ টাকা।
বর্তমানে তাঁর আয়ের বড় খাত হচ্ছে সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া সম্মানী ভাতা। এখান থেকে বছরে তাঁর আয় হয় ২৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। মূল পেশা ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাত থেকে পান বছরে ৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে বর্তমানে এম এ লতিফের হাতে নগদ আছে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৪২ লাখ ৪২ হাজার টাকা। বন্ড বা শেয়ার আছে আছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। ৭ লাখ টাকার গাড়ি আছে একটা। চট্টগ্রাম চেম্বারের এই সাবেক সভাপতির স্বর্ণ আছে ৪৫ হাজার টাকা। ৭৮ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সমাগ্রী রয়েছে। ঋণ প্রদান এবং গাড়ি ক্রয়ের জন্য অগ্রিম রেখেছেন ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া হলফনামায় ব্যাংকে জমাসহ নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি আছে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। আর স্থাবর সম্পত্তি আছে ৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। গতবার ছিল ৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার। আর লতিফের স্থাবর সম্পত্তি আছে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকার। প্রথমবার যখন নির্বাচন করেছিলেন, তখন কোনো স্থাবর সম্পত্তির কথা উল্লেখ করেননি তিনি।
আয় কমে গেলেও এবারও নিজের টাকায় নির্বাচনী খরচ মেটাবেন এম এ লতিফ। এবার খরচ করবেন ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যদিও গতবার খরচ করেছিলেন ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সবকিছুর দাম বেড়েছে। এরপরেও নির্বাচনী খরচ বেড়েছে মাত্র এক লাখ টাকা।
আয় কমলেও সম্পত্তি বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এম এ লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে সারা বিশ্বে মন্দা সৃষ্টি হয়। তার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশেও। কোভিডের কারণে ব্যবসা–বাণিজ্যে খারাপ হওয়ায় আয় কমে গেছে। আর সম্পত্তির পরিমাণ যেটি বেশি দেখা যাচ্ছে, আসলে আগে যা ছিল, এখনো তা আছে। শুধু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পদের আর্থিক মূল্য বেড়েছে।