মর্টারশেলকে গুপ্তধন ভেবে কাটতে গিয়ে...

কুড়িগ্রাম জেলার মানচিত্র
কুড়িগ্রাম জেলার মানচিত্র

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় মাটি খুঁড়ে পাওয়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে হামিদুর রহমান ওরফে বাবু (৩২) নামের এক লেদমিস্ত্রির পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামের মেসার্স সাহা ফিলিং স্টেশনের পেছনের এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

আহত হামিদুর রহমান পেশায় একজন লেদমিস্ত্রি। তিনি উপজেলার দেওয়ানের খামার গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে। হামিদুর বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি দেওয়ানের খামার গ্রামের আজিজ কমান্ডারের বাড়ির পাশের পুকুর খননের কাজ করার সময় হামিদুরের মামা আবদুল গফুর লোহার একটি ভারী বস্তু পান। আবদুল গফুর লোহার বস্তুটি গুপ্তধন ভেবে বিষয়টি গোপন রাখেন। পরে তিনি এটি কাটার জন্য গতকাল রাতে তাঁর ভাগনে হামিদুরের কাছে নিয়ে যান। হামিদুর তাঁর নিজ বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে বিদ্যুৎ-চালিত লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে মর্টারশেলটি কাটার চেষ্টা করেন। এ সময় মর্টারশেলটি বিকট শব্দের বিস্ফোরিত হয়। এতে হামিদুরের ডান পায়ের গোড়ালিসহ হাঁটুর নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অপর পা ঝলসে যায়। বিস্ফোরণে রান্নাঘরের টিনের বেড়াও ভেঙে যায়।

এদিকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পেয়ে স্থানীয় লোকজন হামিদুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তবে এ ঘটনার পর থেকে হামিদুরের মামা আবদুল গফুর পলাতক।

স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আবদুল গফুর মাটি কাটার কাজ করার সময় মর্টারশেলটি পেয়েছিলেন। তবে ঠিক কত দিন আগে পেয়েছেন, এটা কেউ জানেন না।

বিস্ফোরিত হওয়া মর্টারশেলটি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বলে ধারণা করছেন সহকারী পুলিশ সুপার (ভূরুঙ্গামারী সার্কেল) মোর্শেদুল হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে মর্টারশেল বিস্ফোরণের খবর শুনেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সেখানে মর্টারশেলের কিছু খণ্ড টুকরা এবং একটি লোহা কাটার যন্ত্র ও দা পাওয়া গেছে। আহত হামিদুরের মামা মর্টারশেলটি পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।