প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ভেসে উঠেছে মৃত একটি ডলফিন। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকা থেকে মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়েছে। পরে এটি মাটিচাপা দিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা।
উদ্ধারকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৃত ডলফিনটির ওজন ১৩ কেজি। দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে তিন ফুট। এর আগে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১ জুলাই নদীর একই স্থান থেকে ৮০ কেজি ওজনের আরেকটি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছিলে।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডলফিনশাবকটি কয়েক দিন আগে মারা গেছে। এর দেহে পচন ধরেছে। তাই ময়নাতদন্ত না করেই ডলফিনটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। এর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি মনজুরুল কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এটিকে ডলফিনশাবক হিসেবে ধরা যায়। আড়াই থেকে তিন বছর বয়স হবে ডলফিনটির।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর হালদা নদীতে চারটি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। গত ছয় বছরে মৃত্যু হয়েছে ৪৬টি ডলফিনের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হালদা নদীতে এ পর্যন্ত ভেসে ওঠা মৃত ডলফিনগুলোর দু-একটি ছাড়া প্রায় সব কটিরই শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত (অতি বিপন্ন প্রজাতি) জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী হলো ডলফিন। বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে শুধু হালদাতেই রয়েছে ১৭০টি।
রাউজান উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নদীর দূষণ অথবা মাছ ধরতে নদীর পানিতে বিষ প্রয়োগের কারণে ডলফিনশাবকটির মৃত্যু হতে পারে।