‘চা–বাগানে বেজান (খুব বেশি) ঠান্ডা, এই ঠান্ডায় খুব কষ্ট হয়। শীতের কাপড় বেশি নাই, ঠান্ডা বেশি হইলে আগুন তাপাই, আমরা চা–বাগানের মানুষ শীতের মধ্যে অনেক কষ্টে থাকি। আইজ আপনেরা হামদের কম্বল দিলেন, হামদের অনেক ভালা হইলো।’
নতুন কম্বল হাতে পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব নারী তুলসী দাস। আজ শুক্রবার সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের গান্ধীছড়া চা-বাগানের নাটমণ্ডপে তুলসী দাসের মতো আরও ২০০ শীতার্ত নারী–পুরুষের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ করা হয়।
কম্বল পেয়ে তুলসী দাস বলেন, ‘রাতের বেলা পুরাতন কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমাই। ঠান্ডা বাড়লে ঘুম হয় না। আজ কম্বলটা কাঁথার নিচে দিয়ে ঘুমাবো। ঠান্ডা কম লাগবে।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার গান্ধীছড়া চা–বাগানের স্থানীয় সংগঠন মৃত্তিকার সদস্যরা গান্ধীছড়া চা–বাগান, কারুমাঝি বস্তি, বিহারি বস্তির লোকজনকে স্লিপ দিয়ে আসেন। পরে আজ সকালে কয়েক জায়গায় কম্বল বিতরণ করা হয়।
কম্বল নিতে আসা জহরচান বিবি বলেন, ‘আইজ সকালেও অনেক শীত পড়ছিল। কম্বলটা বেশ আরামের। এটা গায়ে দিয়া ঠান্ডার মধ্যে ঘর থেকে বার হওয়া যাইবো। আবার রাইতে লেপের তলে কম্বলটা দিয়া ঘুমানিও যাইবো। আপনাগোরে মন থাকি দোয়া করি। আল্লায় আপনারারে ভালা করবা।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পঞ্চু প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চা–বাগানে অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি শীত পড়ে। সন্ধ্যার পর থেকে হাড়কাঁপানো শীতে টিকে থাকা মুশকিল। চা-বাগানের বেশির ভাগ মানুষের শীতের পর্যাপ্ত গরম পোশাক নেই। রাতের বেলা প্রচুর কষ্ট পায় সবাই। প্রথম আলো ট্রাস্ট এই চা–শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, এটা দেখে ভালো লাগছে। সবাই যদি একে অন্যের পাশে এভাবে দাঁড়ায়, তাহলে দেশে কোনো অসহায় মানুষ থাকবে না।’
কম্বল বিতরণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপরা নায়েক, সাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পঞ্চু প্রধান, উদ্দীপ্ত তারুণ্যের প্রধান সমন্বয়ক হৃদয় শুভ, মৃত্তিকার সভাপতি হায়দার খান, সাধারণ সম্পাদক ইমরান উদ্দিন, চা–শ্রমিক নেতা নয়ন নায়েক, প্রথম আলোর শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি শিমুল তরফদার।
শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।